জীবদ্দশায় মন্দির কমিটির কাছে বারবার অনুরোধ করেছিলেন আবদুল হালিম মণ্ডল, তার জমিটি গ্রহণ করুক মন্দির কমিটি, মন্দিরের উন্নতিতে। কিন্তু কিছু অসুবিধে দেখিয়ে তা গ্রহণ করেননি কর্তৃপক্ষ। হালিম সাহেবের এই ইচ্ছের কথা জানতেন তার পরিবারের সদস্যরা। বহুবার নিজের ইচ্ছের কথা পরিবারের সঙ্গে ভাগও করে নেন হালিম সাহেব।
শেষ পর্যন্ত সেই ইচ্ছে নিয়েই দেহত্যাগ করেন তিনি। পরে তার ইচ্ছেকে বাস্তবায়িত করতে উঠেপড়ে লাগেন স্ত্রী তকিমুন্নেসা বিবি। কিন্তু তিনিও জীবিত থাকাকালীন স্বামীর ইচ্ছে বাস্তবায়িত করতে পারেননি। অবশেষে পুত্রদের তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত মন্দির কর্তৃপক্ষ দান হিসেবে গ্রহণ করেছেন ওই জমি।
বাবা–মায়ের ইচ্ছেপূরণ করতে পেরে পুত্র লুৎফল হক হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন। আর এভাবেই অনন্য নজির গড়েছে ভারতের নবগ্রাম থানার মুকুন্দবাগ গ্রাম পঞ্চায়েতের এই মুসলিম পরিবার। প্রয়াত বাবা–মায়ের পুণ্য স্মৃতির উদ্দেশে একান্ন পীঠের অন্যতম কিরীটেশ্বরী মন্দিরে আবদুল হালিম মণ্ডলের জমি দান করলেন তার পরিবারের সদস্যরা। এই দানের ফলে দূর হয়েছে মন্দিরের প্রবেশদ্বারের
মন্দিরের পুরোহিত তথা সেবাইত দিলীপ ভট্টাচার্য জানান, এ কথা সত্যি, জমিটি মন্দিরের প্রয়োজন ছিল। কেন না, ওই জমির ওপর দিয়েই মন্দিরে প্রবেশ করতে হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কিছু সমস্যা থাকায় জমি গ্রহণে তেমন আগ্রহ ছিল না। দেরি হলেও প্রয়াতর সেই ইচ্ছে পূরণ হল। কিরীটেশ্বরী মন্দিরকে ঘিরে প্রতিদিন ভক্তদের ঢল নামে। পৌষ মাসে বাৎসরিক মেলার সময় তা আরও বাড়ে। মন্দিরের প্রবেশদ্বারে জমি ছিল এলাকার মুকুন্দবাগ গ্রামের বাসিন্দা হালিম সাহেবের। তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় মন্দির কমিটির কাছে আবেদন করেন, যেন জমিটি দলিল করে নেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর ইচ্ছে সে সময় পূরণ হয়নি। পরে পরিবারের চাপে পড়ে তা গ্রহণ করে কমিটি।
জমিদাতা লুৎফল হক জানান, আমাদের কাছে মানুষই ঈশ্বর। শুধুমাত্র বাবা–মায়ের ইচ্ছেপূরণ করেছি মাত্র। তাই গোটা বিষয়টি অহেতুক জানাজানি হোক, তা চাইনি। যাই হোক, বিষয়টি বাস্তবায়িত করতে পেরে হালকা লাগছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ৭ মে, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-৪