সম্প্রতি পর্তুগালের লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাবিদ্যা বিভাগে রক্ষিত এক ‘মানব মুণ্ডের আচার’-এর সন্ধান পাওয়া গেছে। খবরে জানা যাচ্ছে, এই মুণ্ডটি দিয়োগো আলভেস নামে এক সিরিয়াল কিলারের। তার জন্ম ১৮১০ সালে গ্যালিসিয়ায়। সে লিসবনে এসে পৌঁছেছিল জীবিকার সন্ধানে।। কিন্তু শহরে পৌঁছেই সে টের পায় অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত হতে পারলে আয় বিস্তর। ১৮৩৬-১৮৩৯ সালের মধ্যে দিয়োগো তার অপরাধ জীবন শুরু করে। তার প্রাথমিক কাজ ছিল গরিব কৃষকদের উপরে লুঠতরাজ চালানো। সারাদিনের খাটুনির পরে যখন ক্লান্ত কৃষকরা বাড়ি ফিরত, তখন সে তাদের মজুরির টাকা লুঠ করে তাদের এক সেতু থেকে পানিতে ঠেলে ফেলে দিত। অসংখ্য বার সে এই কাজটি করে। তিন বছর এমন কাণ্ড চলার পরে হঠাৎই সে তার কারবার বন্ধ করে দেয়। পুলিশের খাতায় এই মৃত্যুগুলিকে অবশ্ ‘আত্মহত্যা’ হিসেবেই দেখানো হয়েছিল।
এরপরে দিয়োগো এক ডাকাত দল তৈরি করে। এবং গৃহস্থবাড়িতে হানা দিতে শুরু করে। এক চিকিৎসকের বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে সে ধরা পড়ে এবং ১৮৪১ সালে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। এবং তার মুণ্ডটি সংরক্ষণ করা হয়। দিয়োগো এমন কিছু মহাপুরুষ ছিল না যে, তার মুণ্ড এভাবে ‘আচার’ বানিয়ে রাখতে হবে! তা হলে কেন এমনটা করা হল? এর উত্তর বেশ গোলমেলে। যে সময়ে দিয়োগোকে ফাঁসিতে লটকানো হয়, সেই সময়ে ইউরোপে ‘ফ্রেনোলজি’ বা মানব করোটির গঠন থেকে তার চরিত্র ও মনস্তত্ত্ব বোঝার বিদ্যা দারুণ ভাবে চর্চিত হতে শুরু করেছে। সেদিক থেকে দেখলে, দিয়োগোর মুণ্ড ছিল ফ্রেনোলজজির ছাত্রতদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। পরবর্তী কালে ফ্রেনোলজি সম্পর্কে ইউরোপীয়দের আকর্ষণ কমে আসে। কিন্তু দিয়োগোর ‘আচারীকৃত’ মুণ্ডটি থেকে যায় লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অফ মেডিসিনের আলমারির ভিতরে অবিকৃত অবস্থায়। সূত্র: এবেলা।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার