বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম বলেছেন, নুন্যতম লজ্জা থাকলে মাত্র পাঁচ ভাগ ভোট পেয়ে এ সরকার ক্ষমতায় আকড়ে থাকত না। ৫ ফেব্রয়ারীর প্রহসনমূলক নির্বাচন বয়কট করেছে জনগন। আর এ জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারসহ ১৫৪ জন এমপি বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। একমাত্র স্বৈরাচার ছাড়া পৃথিবীর সভ্য কোন দেশে এমন অদ্ভুত নির্বাচনের নজির নেই।
তিনি আরো বলেন, এই অবৈধ সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ এবং বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা অনির্বাচিত সংসদের হাতে নেওয়ার মাধ্যমে একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে নিজেদের মধ্যে ঐক্য করে বিভাজন দূর করে গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।
ঝিনাইদহে ডা. কে আহম্মদ কমিউনিটি সেন্টারে আজ সকালে ২০ দলীয় জোটের কর্মীসভায় কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, কন্ঠশিল্পী মনির খান, সাবেক এমপি শহিদুজ্জামান বেল্টু, সাবেক মহিলা এমপি শাহানা রহমান রানী ও মাহবুবা রহমান শিখা প্রমুখ। কর্মীসভায় ২০ দলীয় জোটের ৬ উপজেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তরিকুল ইসলাম বলেন, আজ গোটা বাংলাদেশ মুমুর্ষু অবস্থায় রয়েছে। দেশের জনগনকে ইনসেনটিভ কেয়ারে রেখে রাজায় রাজায় ক্ষমতা ভোগ করছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল গনতন্ত্র ও সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা কিন্তু দেশে আজ একদলীয় শাসন কায়েম করে গনতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। দেশের সম্পদ লুটপাট, খুন, ডাকাতি, ধর্ষণ, দখল, দলবাজী, টেন্ডারবাজী, গুম আর দেশে ছড়িয়ে পড়া অরাজকতা আড়াল করতে সম্প্রচার নীতিমালা করা হয়েছে। সাংবাদিকরা আজ পরাধীনতার শেকলে বন্দী।
তথ্যমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে তরিকুল ইসলাম বলেন, আজ বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসীরা কখন কি বলছে তার কোন ঠিক নেই। মুজিব হত্যার পর যারা খুশি হয়েছিল, শেখ হাসিনা তাদের পরামর্শে চলছেন। এটি শুভ ও ভাল লক্ষণ না। তিনি বলেন, দেশের এমনই এক ক্রান্তিলগ্নে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গনতন্ত্রের উত্তরণ ঘটিয়েছিলেন। ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা।
দলীয় নেতাকর্মীদের গনতন্ত্র ও দেশ রক্ষার আন্দোলনে আরো সক্রিয় ভুমিকা পালনের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, এমপি বা উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার লোভে দলকে বিভাজন করবেন না। আজ দেশের গনতন্ত্র বিপন্ন। এই বিপন্ন গনতন্ত্রকে উদ্ধার করতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শ্লোগান 'অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নয়, গনপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন' এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে হিংসা, বিদ্বেষ ও বিভাজন ভুলে এক কাতারে সামিল হতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরো বলেন, টিভিতে আজ চোপা ও চাপার প্রতিযোগিতা চলছে। দেশে যে শাসন ব্যবস্থা আছে তাকে গনতন্ত্র বলা যায় না। সরকার যে অপকর্ম করছে, তাতে তারা আতংকে আছে। এমন আতংকে আছেন যে, তাদের আমলে শতকরা আশি ভাগ বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার পরও আস্থা রাখতে পারছেন না। এ জন্য অবৈধ সংসদে বিচারপতিদের অভিশংসনের আইন পাস করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিচারপতিদের অভিশংসনের আইন পাস করার ক্ষমতা এই সংসদের নেই। কারন এই সংসদ প্রহসনমুলক নির্বাচনে তৈরী। কালাকানুন তৈরী করে সরকার ক্ষমতায় থাকতে চাইলে জনগনের দেশ জনগন দখল করতে দ্বিধাবোধ করবে না।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকার হাওয়ার উপর ভাসছে। সরকারকে বিদায় দেওয়া কঠিন কোন কাজ নয়। হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে যারা নিহত হয়েছেন, আন্দোলনে বিজয় অর্জন করে তাদের রক্তের মুল্য ফিরিয়ে দিতে হবে।