দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানিয়েছে, পদ্মাসেতু দুর্নীতিতে কোনো ধরনের দুর্নীতি হয়নি। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটির দাবি, বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আজ বুধবার বিকেলে সেগুনবাগিচাস্থ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হয়।
দুদক চেয়ারম্যান মো: বদিউজ্জামান ব্রিফিংয়ে বলেন, 'পদ্মাসেতু দুর্নীতি নিয়ে আমরা দুই দফা অনুসন্ধান করি। প্রথম দফায় ঠিকাদার নিয়োগে, দ্বিতীয় দফায় পরামর্শক নিয়োগে অনুসন্ধান করা হয়। ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অনুসন্ধানটি নথিভূক্ত করা হয়।'
তিনি বলেন, 'দ্বিতীয় দফায় বিশ্বব্যাংক দাবি তোলে, পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র হয়েছে। গণমাধ্যমেও এ বিষয়ে অনেক লেখালেখি হয়। পরে আমরা অনুসন্ধান শেষে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে মামলা দায়ের করি। মামলা পরবর্তী তদন্তে আমরা দুর্নীতি বা দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগের কোনো সত্যতা পাইনি।'
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, 'বিশ্বব্যাংক টিমের সঙ্গে আমাদের কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেনি, যার ভিত্তিতে আমরা তদন্ত চালিয়ে যেতে পারি। এছাড়া তদন্ত সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার কোনো তথ্য ছিলো না।'
বদিউজ্জামান বলেন, 'দুদক প্রথম পদ্মাসেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মামলা করে। মামলা পরবর্তী তদন্তে আমরা ষড়যন্ত্রেরও কোনো প্রমাণ পাইনি।'
সাবেক সেতু সচিবকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'তদন্তের স্বার্থে দুদক যে কাউকে গ্রেফতার করতেই পারে।'
দুদকের কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ব্রিফিংয়ে বলেন, 'বিশ্বব্যাংক অভিযোগ করেছিল, কানাডার এসএনসি লাভালিনের কর্মকর্তা রমেশ সাহার ডায়েরিতে ঘুষের তালিকা ছিল। কিন্তু ডায়েরির কোনো অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি। কানাডার আদালতে বলা হয়েছে, নোটপ্যাডের কথা। নোটপ্যাড আর ডায়েরির মধ্যে পার্থক্য অনেক। কাজেই রমেশের ডায়েরি বলে কিছু নেই।'
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, দুদক এখন বলছে, তদন্তে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাহলে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তারা কি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়নি? এর উত্তরে দুদক কমিশনার বলেন, আমরা তদন্তের প্রয়োজনে এজাহার করেছি। অধিকতর তদন্তের জন্য এজাহার করা প্রয়োজন ছিলো বলে করেছি।'
বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক ছিলো কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে চুপ্পু বলেন-‘সামথিং ওয়াজ দেয়ার’।
ব্রিফিংয়ে দুদকের চেয়ারম্যান মো: বদিউজ্জামান বলেন, 'পদ্মাসেতু দুর্নীতি প্রতিবেদন কিছুদিন আগে কমিশনে জমা হয়েছে। এ প্রতিবেদনে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি। এ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল হয়ে নথিভূক্ত হবে।'