২৪ ঘণ্টায় ১১ বার মেঘভাঙা তুমুল বৃষ্টি! চারটি হড়পা বান! একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নাজেহাল ভারতের হিমাচল প্রদেশ। মঙ্গলবারও রাতভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে মন্ডিসহ একাধিক জেলায়। এখন পর্যন্ত জেলায় পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। নিখোঁজ অন্তত ১৬ জন।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যা থেকে মন্ডিতে ২৫৩.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মঙ্গলবার সারা রাজ্যে মোট ১১ বার মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে। এর বেশির ভাগই হয়েছে মন্ডী জেলায়। কোথাও কোথাও ধসও নেমেছে। একটানা বৃষ্টি এবং একের পর এক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
বুধবারও কাংড়া, সোলান এবং সিরমৌর জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। শনিবার বজ্রবিদ্যুৎসহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে উনা, হামিরপুর, কাংড়া এবং মন্ডী জেলায়। ইতিমধ্যেই ভারী বৃষ্টির জেরে রাজ্যে ৪০৬টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, যার মধ্যে ২৪৮-টিই মন্ডি জেলায়। মন্ডি জুড়ে ৯৯৪টি ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে গিয়েছে। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
সরকারি সূত্রে খবর, মন্ডি জেলার গোহরে চারটি, কারসোগে তিনটি, ধরমপুরে দুইটি এবং থুনাগে একটি মেঘভাঙা বৃষ্টির খবর পাওয়া গিয়েছে। বাডা এবং তালওয়ারায় দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কারসোগ এবং যোগিন্দরনগরের নেরি-কোটলা থেকে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিপদ এড়াতে মন্ডি এবং হামিরপুর জেলা প্রশাসন সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
স্থানীয় সরকারি কর্তারা জানিয়েছেন, মন্ডিতে ২৪টি বাড়ি, ১২টি গবাদি পশুর খোঁয়াড়, একটি সেতু এবং বেশ কয়েকটি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩০টিরও বেশি গবাদি পশুর। এ বিষয়ে মন্ডির ডেপুটি কমিশনার অপূর্ব দেবগন বলেন, ‘মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং হড়পা বানের জেরে জেলার বহু জায়গায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশ কয়েক জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনুসন্ধান এবং উদ্ধার অভিযানে হাত লাগিয়েছে জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর (এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ), হোমগার্ড এবং পুলিশের যৌথ দল। জেলার সমস্ত নদী ও খালগুলি উপচে পড়ার মতো অবস্থা। বিপাশা নদীর উপর পান্ডোহ বাঁধ থেকে ১.৫ লক্ষ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে একাধিক রাস্তা। ফলে বিপাকে পড়েছেন পর্যটক ও সাধারণ যাত্রীরা।
হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু জানিয়েছেন, ২০ জুন রাজ্যে বর্ষা প্রবেশের পর থেকে এখনও পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশে ৫০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত দু’-তিন বছরে মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এর নেপথ্য কারণও পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।’’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল