চট্টগ্রামের পটিয়ায় পুলিশের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম। সংঘর্ষে চার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ আহত হয়েছেন। এর জেরে ছাত্ররা গতকাল ‘পটিয়া ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন, অবরোধ করেন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) আন্দোলনের মুখে গত রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পটিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধ সংগঠন) সহসভাপতি দীপংকর তালুকদারকে আটক করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। পরে তাকে পটিয়া থানা চত্বরে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু ওই ছাত্রলীগ নেতার নামে কোনো মামলা না থাকায় পুলিশ গ্রেপ্তার করতে চায়নি। এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় চার পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ২০ জন আহত হন। এ ঘটনার জেরে গতকাল সকাল ১০টার দিকে ছাত্ররা প্রথমে পটিয়া থানা ঘেরাও করে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরের অপসারণ দাবি করে। এরপর তারা বাইপাস মোড়ে অবস্থান নিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে। এনসিপি নেতাদের অভিযোগ, ওই ছাত্রলীগ নেতাকে স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলেও তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গেলে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশ হামলা চালায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক রিদওয়ান সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা জানতে পারি, পটিয়া স্টেশনে ছাত্রলীগের একজন নেতা অবস্থান করছেন। পরে তাকে ধরে থানায় নিয়ে গেলে পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিপেটা করে। আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে।’ এদিকে পটিয়া থানার ওসি নূরের অপসারণের দাবিতে গতকাল বিকালে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ। এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর সংগঠক রিয়াদ বলেন, ‘জনগণ দুর্নীতিগ্রস্ত এক ছাত্রনেতাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ওপর চড়াও হয়েছে। তাই আমরা এই অন্যায়ের বিচার চেয়ে ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছি।’ এ বিষয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা সেখানে সতর্ক আছেন। আমরা আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করি, অপ্রীতিকর কিছু হবে না, শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে।’