সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা ২০১৮ সালের দিনের ভোট রাতে সম্পন্ন করা নিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ভোটে ব্যাপক কারচুপির জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়ী করেছেন তিনি। গত মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচনের আগেই গোয়েন্দা সংস্থা মাঠ দখলে নেয় এবং সরকারের অনুগত পুলিশ, রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের সহযোগিতায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা দিনের ভোট আগের রাতেই সম্পন্ন করে। বিষয়টি যখন বুঝতে পারি, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশনকে অন্ধকারে রেখেই আওয়ামী লীগ সরকার ভোট কারচুপি করেছিল, নির্বাচন কমিশনের কিছু করার ছিল না। নির্বাচনের সময় জানতে পারি, রাতেই অনেক কেন্দ্রে ৩০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পড়েছে। তখন নিশ্চিত হই, রাতেই ভোট দেওয়া হয়েছে। তখন কিছু করার ছিল না। নূরুল হুদা আরও বলেন, এ বিষয়ে আমি অনুতপ্ত ছিলাম। যেহেতু গেজেট প্রকাশ হয়েছে, তখন আমি নির্বাচন বাতিল করতে পারি না। তখন আমার হাতে ক্ষমতাও নেই। কে এম নূরুল হুদার আদালতে দেওয়া এসব স্বীকারোক্তির কথা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের শেরেবাংলা নগর থানার এক উপ-পরিদর্শক। তিনি জানান, নূরুল হুদা বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা নির্বাচন কমিশনকে অন্ধকারে রেখে পুরো প্রক্রিয়াটা শেষ করেছে। গোয়েন্দা সংস্থা রাতের ভোট আয়োজনেও সহায়তা করেছে। মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তাই তৎকালীন নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীনের অধীনে ছিলেন, যিনি সরকারের হয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করতেন। এ অবস্থায় তার একার পক্ষে কিছু করার সুযোগ ছিল না।
এর আগে আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে গত ২২ জুন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহউদ্দিন খান।