স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তার স্বার্থে নকল-ভেজাল ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে সরকার কঠোরতা অবলম্বন করছে। নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে ৩৯ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ৪৪টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে। প্রায় ৩২ কোটি টাকা মূল্যের নকল-ভেজাল ওষুধ জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে রবিবার টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য বেনজীর আহমদের (ঢাকা-২০) লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান।
প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও জানান, নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে। ওষুধের অনিয়ম প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিদ্যমান ওষুধ আইনকে আরও যুগোপযোগী ও কঠোর শাস্তির বিধান রেখে প্রস্তাবিত আইন অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তামাক সেবনে আক্রান্ত ১২ লাখ : সরকারি দলের মহিলা এমপি মমতা হেনা লাভলীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, তামাক সেবনের কারণে ১২ লাখ মানুষ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ অকাল পঙ্গুত্বের শিকার হয়। এসব রোগের মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সার ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগ- যা প্রধানত ধুমপান ও পরোক্ষ ধুমপানের কারণে হয়ে থাকে। মুখ গহ্বরের ক্যান্সার- যা প্রধানত ধোঁয়াবিহীন বিভিন্ন তামাক সেবন পানের সঙ্গে জর্দা বা সাদাপাতার ব্যবহার এবং মাড়িতে গুল ব্যবহারের কারণে হয়ে থাকে।
তিনি আরও জানান, ট্যোবাকো এটলাস ২০১৮ অনুযায়ী, তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর এক লাখ ৬১ হাজারের অধিক লোক মৃত্যুবরণ করে। তামাক হচ্ছে এমন একটি ক্ষতিকর পণ্য, যা উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবন- প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতির ক্ষতি করে। ধুমপান ও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন- দুটোই ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী নেশা। পরোক্ষ ধুমপানও অধুমপায়ীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাক মানুষকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগ ও মৃত্যু বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অর্থনীতিতেও তামাকের প্রভাব অত্যন্ত নেতিবাচক।
তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আলোকে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে একটি খসড়া রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতির খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।
রোগীদের মানসম্মত চিকিৎসা দিতে আইনে খসড়া চূড়ান্ত : টাঙ্গাইল-৬ আসনের আহসানুল ইসলামের (টিটু) লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও রোগীদের মানসম্মত চিকিৎসা দিতে ‘স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন ২০১৯‘ খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে।
অটিস্টিক শিশু ৫০ হাজার ৫০০ জন : মহিলা এমপি গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা ৫০ হাজার ৫০০ জন। এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশের প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর ডিপিপি প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান আছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম