ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় নির্মাণাধীন মধুমতি নদীর ডান-তীর রক্ষা বাঁধের একটি অংশ ধসে পড়েছে। মঙ্গলবার সকাল নাগাদ বাঁধের প্রায় ৩০ মিটার অংশ টানা বৃষ্টিতে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে নদীতীরবর্তী শতাধিক পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গোপালপুর ও টগরবন্দ ইউনিয়নের মিলনস্থল চর আজমপুর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধানে ৩০০ মিটার দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে ছিল। এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে মেসার্স লিটন মল্লিক নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগেই কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বাঁধের সিসি ব্লকগুলো নদীতে ভেঙে পড়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজের গুণগত মান নিশ্চিত না করেই ব্লক বসানো হয়েছে। সঠিকভাবে ডাম্পিং না করায় এবং দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থার কারণেই নির্মাণাধীন অবস্থায় বাঁধটি ধসে পড়ে। তাদের আশঙ্কা, দ্রুত মেরামত না করা হলে অন্তত অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
চর আজমপুর গ্রামের বাসিন্দা হান্নান শরীফ বলেন, 'বাঁধের কাজ শুরু হওয়ায় আমরা অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম। কিন্তু এখন আবার ভাঙনের আতঙ্কে ঘুমহীণ রাত কাটাচ্ছি।'
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার জিয়াউর রহমান জানান, 'নদীতে অতিরিক্ত পানির চাপে বাঁধের কিছু অংশ ধ্বসে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পানি কমলে তা স্থায়ীভাবে মেরামত করা হবে।'
এদিকে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, 'ধসের খবর পেয়ে আমরা একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পুণরায় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প এখনও চলমান, কাজ বুঝে নেওয়া হয়নি। তবু যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
উল্লেখ্য, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০২৩ সালের ৬ জুন একনেক সভায় ‘মধুমতি নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদন পায়। প্রকল্পটির ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৪৮১ কোটি ১০ লাখ টাকা। ২৮টি প্যাকেজে বিভক্ত এই প্রকল্পের আওতায় আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী এলাকায় মোট ৭.৫ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। ধসে পড়া বাঁধটি প্রকল্পের ২ নম্বর প্যাকেজের আওতায় নির্মিত হচ্ছিল।
বিডি প্রতিদিন/মুসা