নেত্রকোনার ঐতিহ্যবাহী ধলাই নদীর পানিপ্রবাহ ও নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে চলছে কচুরিপানা পরিষ্কারের কাজ। দীর্ঘদিন ধরে কচুরিপানায় ভরাট হয়ে থাকা নদীটি অবশেষে পুনরুজ্জীবনের পথে। উদ্যোগ নিয়েছে পৌরসভা, সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা, স্বেচ্ছাসেবক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলার রাজুরবাজার এলাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন ও অংশগ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান। এ সময় স্বেচ্ছাসেবকদের উৎসাহিত করতে তিনিও হাত লাগান নদী পরিষ্কারের কাজে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ধলাই একটি ঐতিহ্যবাহী নদী। এক সময় এ নদী স্থানীয়দের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার হতো। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে নদী তার নাব্যতা ফিরে পেলে মাছের যোগান বাড়বে, জলাবদ্ধতা দূর হবে, আর সাধারণ মানুষও উপকৃত হবে।’
তিনি আরও জানান, ‘নদী পরিষ্কারের কাজ শেষে একটি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে, যাতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ও আগ্রহ বাড়ে এবং নদী রক্ষায় সবাই সচেতন হন।’
নেত্রকোনা পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম সরদার জানান, ‘দেড় মাস আগে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে ইতোমধ্যে রাজুরবাজার থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার নদী কচুরিপানামুক্ত করা হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার পর যেন পুনরায় নদী দূষিত না হয়, সে বিষয়ে স্থানীয়দের সচেতন থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবার সম্মিলিত চেষ্টাতেই ধলাই নদী আবার প্রাণ ফিরে পাবে।’
প্রসঙ্গত, প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও শত মিটার প্রস্থের ধলাই নদী একসময় নেত্রকোনা শহরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। জেলার পূর্বধলার ধলীরকান্দা থেকে উৎপত্তি হয়ে নদীটি মিশেছে মগড়া নদীতে। একসময় এই নদী দিয়ে চলত নৌযান, মাছ ধরাসহ নানা কার্যক্রম।
কিন্তু গত দেড় যুগ ধরে অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও কচুরিপানার কারণে নদীটি হয়ে পড়ে ব্যবহারের অনুপযোগী। মইনপুর থেকে রাজুরবাজার পর্যন্ত প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার এলাকায় নদীর চেহারা ছিল জলাবদ্ধতা ও ময়লায় ভরা।
সাধারণ মানুষ বহুবার পরিষ্কারের দাবি জানালেও এতদিন তা আলোর মুখ দেখেনি। এবার পৌরসভা ও প্রশাসনের সক্রিয় উদ্যোগে সেই দাবি বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ