সৌরজগতের বাইরে থাকা এক দূরবর্তী গ্রহে (এক্সোপ্ল্যানেট) পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডল থাকতে পারে বলে ধারণা দিচ্ছে গবেষণা। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণে এ সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে।
গ্রহটি ট্রাপিস্ট-১ই (TRAPPIST-1 e)। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ট্রাপিস্ট-১ নামের এক ক্ষুদ্র নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। ২০১৬ সালে বেলজিয়ামের পাঁচজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী এ নক্ষত্রমণ্ডল আবিষ্কার করেন।
ট্রাপিস্ট-১–এর চারপাশে অন্তত সাতটি শিলাময় গ্রহ রয়েছে। এদের মধ্যে তিনটি ‘হ্যাবিটেবল জোনে’ (জীবনের উপযোগী কক্ষপথে) ঘুরছে। এর মানে হলো—এদের বায়ুমণ্ডল থাকলে তরল পানি টিকে থাকতে পারে।
২০২৩ সালে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে চারবার পর্যবেক্ষণের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানান, ট্রাপিস্ট-১ই–তে বায়ুমণ্ডল থাকলেও তা সম্ভবত শুক্র বা মঙ্গলের মতো নয়। ওই গ্রহ দুটির বায়ুমণ্ডলে প্রধানত কার্বন ডাই-অক্সাইড রয়েছে।
গবেষকদের ধারণা, ট্রাপিস্ট-১ই–তে নাইট্রোজেনভিত্তিক বায়ুমণ্ডল থাকতে পারে, যা পৃথিবীর মতো। এ নিয়ে আরও ১৫টি পর্যবেক্ষণ পরিকল্পনা করা হয়েছে। নিশ্চিত হলে, সৌরজগতের বাইরে প্রথমবারের মতো পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডল শনাক্ত হবে।
ট্রাপিস্ট-১ই আকারে পৃথিবীর কাছাকাছি হলেও এর কক্ষপথ অনেক ছোট। তুলনামূলকভাবে খুব দ্রুত এটি তার নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে। বিজ্ঞানীরা জানান, যদি ট্রাপিস্ট-১ নক্ষত্রকে সৌরজগতে বসানো হয়, তবে এর সবগুলো গ্রহই বুধ গ্রহের কক্ষপথের ভেতরে ফিট হয়ে যাবে।
গবেষণার সহলেখক এমআইটির অধ্যাপক সারা সিগার বলেন, এই ফলাফল আমাদের দৃষ্টি আরও স্পষ্ট করে দিচ্ছে—এটি শুক্র বা মঙ্গলের মতো নয়, বরং নতুন সম্ভাবনার দিক খুলে দিচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা আরও বলেন, ট্রাপিস্ট-১ই–তে যদি কোনো বায়ুমণ্ডল না-ও পাওয়া যায়, তবুও এ গবেষণা ভবিষ্যতের অনুসন্ধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি তৈরি করবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল