প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সহায়তার পাশাপাশি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪০তম জাতীয় সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
আনসার ও ভিডিপির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাহসিকতা ও কর্মদক্ষতা বর্তমানে সর্বজন স্বীকৃত। জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচনে দায়িত্বপালনসহ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও মৌলবাদ নির্মূলে আনসার বাহিনী বিশেষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, আনসার ও ভিডিপি বাহিনীকে উন্নয়ন কাজে আরও সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। আপনারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাবেন সে আশা পোষণ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বাহিনীর প্রায় ৫০ হাজার অঙ্গীভূত আনসার সদস্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বিধান করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অনন্য ভূমিকা পালন করছে। বিমান বন্দরের নিরাপত্তায় এ বাহিনীর সদস্যরা ‘এভসেক (এভিয়েশন সিকিউরিটি)’ এর অংশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। দেশ ও জনপদকে নিরাপদ রাখতে দু’টি নারী ব্যাটালিয়নসহ এ বাহিনীতে ৪২টি আনসার ব্যাটালিয়ন রয়েছে।
‘আনসার ব্যাটালিয়ন আইন’ প্রণয়ন করার কার্যক্রম সরকার হাতে নিয়েছে এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স ও আম্রকাননের নিরাপত্তার জন্য দু’টি আনসার ব্যাটালিয়ন গঠনের কার্যক্রম প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, একটি গার্ড ব্যাটালিয়নসহ চারটি আনসার ব্যাটালিয়ন গঠন, ব্যাটালিয়নের সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করে জনবল বৃদ্ধি, আনসার ও ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, ঝুঁকিভাতা প্রবর্তনসহ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।
দৃষ্টান্তমূলক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এবছর ১৪৩ জনকে ‘সেবা’ ও ‘সাহসিকতা’ পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, হেলিকপ্টারে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরের সফিপুরের আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ।
এরপর প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী খোলা জিপে প্যারেড পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্যারেড পরিদর্শন শেষে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিবেশন করা হয়। অভিবাদন মঞ্চে থেকে প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন।
কুচকাওয়াজের নেতৃত্ব দেন প্যারেড কমান্ডার মোহাম্মদ সাইফুজ্জামান। কুচকাওয়াজের নৈপূন্যের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছরই উৎকর্ষতা বাড়ছে।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের পরিবেশিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন তুলে ধরা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম