বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আজকের ‘সর্বাত্মক অবস্থান’ কর্মসূচিতে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে মানুষের ফোন তল্লাশি করে হেনস্তা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিনষ্ট হয়, এমন কিছু করা যাবে না।’
সাধারণ মানুষের মোবাইল ফোন চেক (তল্লাশি) করা এবং নিরস্ত্র-নিরপরাধ ব্যক্তির ওপর চড়াও হওয়া ‘নিন্দনীয়’ বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ কথা জানান।
নাহিদ ইসলাম তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘কারও ফোন চেক করা, নিরস্ত্র-নিরপরাধ ব্যক্তির ওপর চড়াও হওয়া নিন্দনীয়। একইভাবে গ্রেফতার ব্যক্তিদের মিডিয়ায় বাজেভাবে উপস্থাপন মানবাধিকার লঙ্ঘন। অপরাধীদের আইনের প্রক্রিয়া অনুসারে বিচার করতে হবে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমাদের অভ্যুত্থান ন্যায় ও নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ, জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের লক্ষ্য ছিল। আমাদের যেমন প্রতিরোধ জারি রাখতে হবে অন্যদিকে নিজেদের অভ্যুত্থানের স্পিরিট বজায় রাখতে হবে।’
এ ছাড়া ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পথচারীদের ফোন চেক করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
আজ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ ফোন চেক করলেও প্রাইভেসি লঙ্ঘন, আপনারা আজকে যেটা করলেন সেটাও প্রাইভেসি লঙ্ঘন। প্রাইভেসি লঙ্ঘন যেই করবে তার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান থাকবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আজকের ‘সর্বাত্মক অবস্থান’ কর্মসূচিতে বিভিন্ন জায়গায় মানুষের ফোন চেক করে হেনস্তা করার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন স্পষ্ট করে বলতে চায়, মানুষের প্রাইভেসি বিনষ্ট হয় এমন কোনোকিছুই আমরা সমর্থন করি না। এমন কাজ পুরোনো বৈষম্যের দৃষ্টান্তকেই আবার নতুনভাবে ডেকে আনছে। তাই ফোন চেকসহ নাগরিকের ব্যক্তিজীবনের স্বাভাবিক যাত্রা বিনষ্ট হয় এমন কিছুই করবেন না।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনের পথে ‘মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের স্বাধীনতা’ নিশ্চিত করা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। তাই সকলকে আহ্বান করা যাচ্ছে, সারাদেশে ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিন এবং স্বাভাবিক জনজীবন যাতে আরও সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয় তা নিশ্চিতে রাজপথে থাকুন।
এদিকে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় পথচারীদের পাশাপাশি দায়িত্বরত সাংবাদিকদের বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে হ্যান্ড মাইকে সাংবাদিকদের ছবি না তুলতে এবং ভিডিও না করতে নিষেধ করা হয়। এসব ঘটনার নিন্দা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ