টিকিট পাওয়া যাবে? পরিচিত যার সঙ্গেই দেখা, এ প্রশ্নের উত্তর দিতেই হচ্ছে। ১০ জুন ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে খেলতে নামবে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর। ফুটবলীয় এমন লড়াইয়ে কতবারই তো বিভিন্ন দলের বিপক্ষে খেলতে নেমেছেন লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। গত প্রায় দুই দশকে এমন আগ্রহ চোখে পড়েনি। একসময় আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের টিকিট কেনার আশায় দীর্ঘ লাইন দেখা যেত ঢাকা স্টেডিয়ামে। সেই দৃশ্য বাংলাদেশের ফুটবলে ছিল সুদূর অতীত। তবে হারানো অতীতই যেন ফিরে আসছে। হামজা দেওয়ান চৌধুরী, সামিত সোম আর ফাহামিদুল ইসলামদের নিয়ে গড়ে উঠছে এক অদম্য দল। যে দলের খেলা দেখতে টিকিটের আশায় হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ফুটবলপ্রেমীরা। বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে ৩০ মে। তবে শুরুতেই ক্যাম্পে যোগ দিতে পারছেন না হামজা ও সামিত। গত রাতেই শেষ হয়েছে হামজার দল শেফিল্ড ইউনাইটেডের মৌসুম। তবে তিনি ২ জুনের আগে আসতে পারছেন না। অন্যদিকে সামিত খেলছেন কানাডিয়ান লিগের দল ক্যাভালরিতে। তাঁর ম্যাচ রয়েছে ৩১ মে। ৩ জুন বাংলাদেশে আসবেন সামিত। এর পরই শুরু হবে বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন যুগ।
গত মার্চে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে অভিষিক্ত হয়েছেন হামজা চৌধুরী। সে ম্যাচে তাঁর খেলায় মুগ্ধ হয়েছেন সবাই। নতুন আশা বুকে নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনে চলেছেন বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা। ১০ জুন ঢাকার মাঠে সেই স্বপ্নের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারেন হামজা-সামিতরা। এ ম্যাচে জয় পেলে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ বাড়বে বাংলাদেশের। হামজা-সামিতদের খেলা দেখার অপেক্ষায় আছে পুরো দেশ। তবে ফুটবলপ্রেমীদের ইচ্ছা পূরণ হয়নি এখনো। ১০ জুনের ম্যাচ দেখার টিকিটটাই পাননি তারা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন টিকিফাইকে দায়িত্ব দিয়েছিল অনলাইনে টিকিট বিক্রি করার জন্য। ২৪ মে দুপুরে টিকিট অনলাইনে পাওয়ার কথা ছিল। পিছিয়ে তা রাত ৮টায় করা হয়। গত শনিবার রাত ৮টায় একসঙ্গে কয়েক লাখ ফুটবলপ্রেমী টিকিফাইয়ের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে টিকিট কেনার জন্য। তবে ওই ওয়েবসাইটে প্রবেশই করতে পারছিলেন না তারা। সার্ভার নট ফাউন্ড অথবা সার্ভিস টেমপোরারিলি আনঅ্যাভেইলেবল মেসেজ দেখাচ্ছিল। বাফুফে থেকে এর কারণ হিসেবে সাইবার আক্রমণের কথা বলা হয়। এরপর দীর্ঘ দুই দিন অপেক্ষা করেও টিকিফাইয়ের ওয়েবসাইটে টিকিট কেনা যায়নি। সাধারণ দর্শক টিকিট না পেলেও দক্ষিণ-পূর্বের জেনারেল গ্যালারি, ক্লাব হাউস (আপার) এবং স্কাই ভিউ ক্যাটাগরির টিকিট সোল্ডআউট (বিক্রয় শেষ) দেখাচ্ছে টিকিফাইয়ের ওয়েবসাইটে। অবশ্য গত রাতেই টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার কথা মিডিয়াকে জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। তিনি বলেন, ‘বাফুফে সব সময় ইনোভেটিভ কাজ করে থাকে। প্রথমবার ভুলত্রুটি হতে পারে। এটা স্বীকার করে নিয়েছি। দুটি-একটি আইপি অ্যাড্রেস থেকে সাইবার আক্রমণ হয়েছে। এজন্য সাইবার ডাউন ছিল। টিকিট সংগ্রহ পর্যায় থেকে স্টেডিয়ামে প্রবেশ পর্যন্ত আমরা নজরদারি রাখব। ১০ জুন ম্যাচ, এখনো অনেক সময় আছে। আমরা একটু সময় নিয়ে পুনরায় শুরু করছি। আশাবাদী আজ (গতকাল) আবার রাত ১০টা থেকে সাইট ও প্ল্যাটফর্ম অন হবে সীমিত পরিসর হলেও।’ বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে কয়েক বছর আগেও দর্শক ছিলেন হতাশ। তবে বর্তমানে দেশের ফুটবলে এসেছে নতুন জোয়ার। বসুন্ধরা কিংস মাঠে টেনেছে দর্শক। এরপর হামজা চৌধুরী এসে ফুটবলে এনেছেন নতুন জোয়ার। একসময় ক্রিকেটের টিকিট পেতে মরিয়া হয়ে রাস্তায় নেমে পড়তেন দর্শক। এখন ফুটবলেও দেখা যাচ্ছে একই দৃশ্য। তবে টিকিট নিয়ে এমন বিশৃঙ্খলা চলতে থাকলে ফুটবল উন্মাদনায় এর প্রভাব পড়তেই পারে!