সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ৫ আগস্ট গণভবনে গিয়ে পদত্যাগের জন্য শেখ হাসিনার পা ধরেছিলেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সামনে লিখিত এক তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে এ তথ্য পাঠ করে শোনান তিনি। চিফ প্রসিকিউটর বলেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন শেখ হাসিনা। অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও আরও রক্তপাতের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আদালত অবমাননার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলকে আগামী ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল ট্রাইব্যুনাল থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে রবিবার ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় চিফ প্রসিকিউটর জানান, ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা তিনি রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। এ সময় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে- এটা কিছুতেই মানতে চাইছিলেন না শেখ হাসিনা। পরে পরিবারের সদস্যরা বোঝানোর পর তিনি পদত্যাগে রাজি হন। দ্রুতই পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে, ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে সামরিক হেলিকপ্টারে দেশত্যাগ করেন তিনি।
গতকাল পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ১১(৪) ধারা এবং ট্রাইব্যুনাল বিধিমালা-২০১০ এর ৪৫ বিধির আওতায় শেখ হাসিনা ও শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নোটিস পাঠানো হলেও তারা পূর্বনির্ধারিত তারিখে হাজির হননি এবং কোনো লিখিত জবাবও দেননি। এই প্রেক্ষাপটে আত্মপক্ষ সমর্থনের আরও একটি সুযোগ দিয়ে ট্রাইব্যুনাল আগামী ৩ জুন সকাল ১০টায় তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে বক্তব্য পেশের নির্দেশ দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ে তারা হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম চলবে বলে জানানো হয়েছে।
অভিযোগের পেছনে রয়েছে একটি ভাইরাল অডিও, যেখানে বলা হয়, ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি।’ ফরেনসিক পরীক্ষায় এটি শেখ হাসিনার কণ্ঠ বলে প্রমাণিত হওয়ার পর আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়।