জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া বলেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের মধ্যে এক ধরনের কাজ আছে; যা রাষ্ট্রে এবং সমাজকে ক্ষতি করে। সরাসরি রাষ্ট্র সংক্রান্ত বিষয় যেটা ব্যক্তি দল সরকার সবার ঊর্ধ্বে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করার দায়িত্ব জনপ্রশাসনের। তেমনি সামাজিক আন্দোলনের মধ্যে নাগরিকদেরও ভূমিকা রাখতে হবে।’
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সঙ্গে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আইয়ুব মিয়া বলেন, ‘দুর্নীতি ও রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদ ও জনপ্রশাসনের মাঝে একটা অদৃশ্য দেয়াল আছে। কখনও কখনও দেয়ালটা ভেঙে একত্রিত হয়ে যায় এবং সেটা সমাজকে ক্ষতি করে। সেজন্য অনেকেই বলেছেন, একটা চেক এন্ড ব্যালেন্স দরকার।’
জনপ্রশাসনে শর্ষের মধ্যে থাকা ভূত তাড়াতে জনগণই একমাত্র ভরসা উল্লেখ করে সংস্কার কমিশনের সদস্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মেহেদী হাসান বলেন, ‘যাদের পকেটে টাকা আছে তারাই ঘুষ দেয়। সমাজের তথাকথিত এলিট শ্রেণি এই ঘুষ প্রথা চালু করে। যারা আইন তৈরি করে; তারাই আইন ভাঙে। তাই এই শর্ষের মধ্যে থাকা ভূত তাড়াতে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হবে।’
সভায় মানবাধিকার সংগঠক জেসমিন সুলতানা পারু বলেন, ‘যারা জনপ্রশাসনে যাচ্ছেন আমরা তাদেরর মেধাটা দেখি; কিন্তু নৈতিক চরিত্র দেখি না। এই জায়গাটা আমাদের দেখা দরকার। তৃণমূল পর্যায় থেকে ওপরের লেভেল পর্যন্ত এমন একটা সম্পর্ক তৈরি হওয়া দরকার; যিনি নির্লোভ-নির্মোহ থাকবেন। শুধু সেবার কথাটা মনে রাখবেন। যখনই প্রশাসনে রাজনীতিবিদরা ঢুকছে; তখনই দুর্নীতি ও বিচারহীনতা শুরু হয়ে গেছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। প্রশাসনকে স্বাধীন করে দিতে হবে। লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কমাতে হবে। ১০ দিনের কাজ এক বছর দুই বছর লেগে যায়। অনেকেই ভূমি অধিগ্রহণের টাকা পাচ্ছেন না। প্রশাসনের ওপর রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।’
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মো. হাফিজুর রহমান ভূঞা, মিহরাজ আহমেদসহ নানা শ্রেণি পেশার ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন।
বিডি প্রতিদিন/এমএস