২০২৪ সালের জুলাই মাসে যখন দ্বিতীয়বারের মতো পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছিল, তাতে তিনি আগ্রহী ছিলেন না। এই অনাগ্রহের কথা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মহাসচিবকে জানিয়েছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জেরায় এসব কথা বলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে আসামি হিসেবে রয়েছেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলার ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হন। গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত অপরাধের দায় স্বীকার করে গত মঙ্গলবার ৩৬তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন সাবেক এই আইজিপি।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের জেরা শুরু করেন মামলার পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
জেরায় আমির হোসেন বলেন, সে সময় গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক গ্রুপিংয়ের কারণে তাকে (চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন) আইজিপি হিসেবে এক্সটেনশন (মেয়াদ বৃদ্ধি) দেওয়ার কথা তিনি জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, যা অসত্য।
জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, তিনি জবানবন্দিতে এ বিষয়ে সত্য কথা বলেছেন।
তখন আমির হোসেন বলেন, গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক গ্রুপিংয়ের জন্য নয়, তিনি (চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন) তদবির করে নিজের স্বার্থে এক্সটেনশন নিয়েছেন।
উত্তরে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, এ কথা সত্য নয়। এরপর আমির হোসেন বলেন, ‘এক্সটেনশন নেওয়ার সময় “না” করেছেন?’
জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, তিনি প্রথম এক্সটেনশনে রাজি হয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয়বার এক্সটেনশনের সময় তিনি আগ্রহী ছিলেন না।
আমির হোসেন প্রশ্ন করেন, তিনি যে আগ্রহী ছিলেন না, এ কথা কাকে বলেছেন?
জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে তার অনাগ্রহের কথা মৌখিকভাবে জানান।
আমির হোসেন বলেন, এ কথা (মুখ্য সচিবকে জানানোর কথা) তিনি মিথ্যা বললেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, তিনি সত্য বলেছেন।
২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আইজিপির দায়িত্ব নেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। চাকরির স্বাভাবিক মেয়াদ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তাকে চুক্তিভিত্তিক আইজিপি নিয়োগ দেয় তৎকালীন সরকার। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তার মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত