ফেব্রুয়ারি মাসটা হাসপাতাল আর ঘরের বিশ্রামেই কেটে গেল। এমনিতেই বসন্ত আমাকে মনে রং দেয় না। কোকিলের অবিরাম ডাক মন উদাস করে রাখে। বিষাদগাথা আচ্ছন্ন করে দেয়। শরীর-মন অবসন্ন থাকে। প্রাণচাঞ্চল্য হারিয়ে ফেলি। বর্ষা হলো আমার যৌবনের কাল। বর্ষা আমাকে রোমান্টিকতাই দেয় না, তারুণ্যের উন্মাদনাও ফিরিয়ে দেয়। জল-জোছনা ও বৃষ্টি আমি মন-প্রাণ দিয়ে উপভোগ করি। ফেব্রুয়ারি আসার আগেই একুশের বইমেলা সামনে রেখে ভক্ত ও পাঠকদের সঙ্গে দু-এক জন বন্ধু প্রকাশক তাগিদ দেন লেখালেখির। বিশেষ করে লেখা আদায় করে নিতে অন্যপ্রকাশের বন্ধু মাজহারুল ইসলামের জুড়ি নেই। গেল বছর বইমেলায় কোনো পাণ্ডুলিপি দিতে পারিনি। নিউজ পোর্টাল চালানোর চাপ, নিয়মিত কলাম লেখা আর টুকটাক পড়াশোনা, বাকিটা আড্ডাবাজি আর এই মৃতনগরীর যানজটে চলে যায়। এবারও একুশের বইমেলায় কোনো বই প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল না। অনুজপ্রতিম রঞ্জু রাইম ও মেহেদী হাসানের সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত রাজনৈতিক কলামগুলো নিয়ে জিনিয়াস পাবলিকেশন ‘খবরের বারান্দা’ বইটি প্রকাশ করেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনাশাসনবিরোধী উত্তাল ছাত্র আন্দোলনের প্রিয় মুখ এ বি এম জাকিরুল হক টিটন বন্ধুই নয়, একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবে খুব কাছের। আড্ডার আসরে জাসদের টিটনের জুড়ি নেই। টিটনের চাপে শেষ পর্যন্ত লিখতে বসা। অগোছালো মানুষ আমি। শেষ মুহূর্তে ব্যাগ গোছানো যাত্রীর স্বভাব আমার যেন দৌড়াতে দৌড়াতে লাফ দিয়ে ট্রেনে ওঠা মানুষ। টিটনের চাপে আর মাজহারুল ইসলামের তাগিদে শেষ পর্যন্ত লিখে ফেললাম, ‘জেনারেলের কালো সুন্দরী’ উপন্যাস। বাঙালি জাতির মহত্তম নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৌকার পক্ষে সত্তরের নির্বাচনে গণরায় তার দীর্ঘ সংগ্রামের স্বাধিকার-স্বাধীনতার পথ ধরে সুমহান মুক্তিযুদ্ধের পথ ধরে বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে আসার সময়টিকে ঘিরে মুক্তিযুদ্ধনির্ভর এই উপন্যাস। একাত্তরের গণহত্যার নায়ক জেনারেল ইয়াহিয়া বালুচিস্তানের কসাই টিক্কা খানকে দিয়ে বাংলাদেশে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিলেন। রাও ফরমান আলীর মতো নিষ্ঠুর জেনারেলরা আলবদর দিয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। অন্যদিকে একাত্তরের রাজনীতির খলনায়ক জুলফিকার আলী ভুট্টো ডুবেছিলেন শরাবে আর নারীতে। জেনারেল ইয়াহিয়া খান ইসলামাবাদে রাষ্ট্রপতির ভবনকে বানিয়েছিলেন বেশ্যালয়। রোজ রাতে কালো সুন্দরী থেকে জেনারেল রানী, তানিয়া, নূরজাহানদের নিয়ে দুই বোতল হুইসকিতে যৌনদানবে পরিণত হতেন এই জল্লাদ। আর পাকিহানাদার বাহিনীর নৃশংসতার আর্তনাদে বাংলাদেশের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠত। সেসব ঘটনাবলি এই উপন্যাসের পাতায় পাতায় উঠে এসেছে। অন্যপ্রকাশ বইটি দ্রুত প্রকাশ করলেও লেখক হিসেবে মনে হয়েছে, নিজের প্রতিই নয়, পাঠকদের প্রতি অবিচার করেছি। অন্তত আরও চার থেকে পাঁচ দিন সময় ব্যয় করলে বইটি পাঠকদের জন্য সুখপাঠ্য হতো। তবুও আশা করছি পাঠকরা ঠকবেন না। আমাদের তারুণ্যে প্রতি বছর বইমেলায় প্রায় রোজ যাওয়া হতো। ’৯৩ সাল পর্যন্ত বইমেলায় নিয়মিত গেছি। তারপর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০০৫ সালে মেলায় যাওয়া। কিন্তু সেই প্রাণ আর ফিরে পাইনি। তবু প্রাণের বইমেলা খুব টানে। বইমেলার আড্ডা নস্টালজিক করে তোলে। সবার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ মনে আনন্দ দেয়।
তিন বছর আগে মেলায় যাওয়ার কথা ছিল অনেকের সঙ্গে। কেউ কেউ কথা রাখলেও কেউ কেউ কথা রাখেনি। নির্দয়-স্বার্থপর হৃদয় তাদের যখন যা ভালো লাগে তাই করে। নিজের ষোলআনা সুখ-আনন্দ ও হিসাব পাই পাই বুঝে নিতে শেখে। হিসাবের খাতা আমারই কেবল শূন্য থেকেছে। ওরা বইমেলায় একা একা গেলেও আমার আর যাওয়া হয়নি। মতিহারের বন্ধুরা আমার অনুজ ভক্তরা দল বেঁধে গেছে। আমাকে ডেকেছে। তবু যাওয়া হয়নি। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে মনকে ফেলে রেখেছি একুশের বইমেলায়। দুই দিন আগে হাসপাতাল ছাড়ার সময় ডাক্তার বলেছেন, ১৫ দিনের বেডরেস্ট। হাসপাতালকে জেলখানা আর বাড়িতে বিশ্রাম মানে গৃহবন্দী মনে হয় নিজেকে। এই স্বভাবের মানুষ কখনো আমি ছিলাম না। সবাইকে ডেকেও বইমেলায় যেতে পারিনি। এই লেখা যখন লিখছি, তখন মেলার আয়ু মাত্র আর দুই দিন। শেষ দিন মেলা ভাঙনের করুণ সুর ভাসে। ইতিমধ্যে বৃষ্টি ও শিলা পাথরের দাপট শুরু হয়েছে। তবুও শেষ হওয়ার আগের দিন মেলায় যাব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেক ভক্ত জেনারেলের কালো সুন্দরী নিয়ে ফেসবুকের ইনবক্সে মন্তব্য দিচ্ছেন, ছবি দিচ্ছেন।
কিন্তু দেশের রাজনীতি ও শারীরিক দখল মিলিয়ে কোনো কিছুতেই সুখ পাচ্ছি না। এ বছর নির্বাচনের বছর। কথা ছিল, সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে আগামী জাতীয় নির্বাচন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের তিন বছর আগে রিপোর্ট করেছিলাম, ‘বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন উৎসব’। আর এই জাতীয় নির্বাচনের দুই বছর আগে রিপোর্ট করেছিলাম, ‘খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে নির্বাচন উৎসব’। সরকার ও বিরোধী দলের রাজনৈতিক গতি-প্রকৃতি মামলা, রাজনীতির অন্দরমহলের হিসাব-নিকাশ, তথ্য-উপাত্তের ছড়াছড়ি। নানামুখী আলোচনা মিলিয়েই ছিল এমন পূর্বাভাস। সেই রাজনীতির আবহাওয়ার আগেরটি সত্যে পরিণত হয়েছিল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন ও প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিল বিএনপি জোট। সহিংস হরতাল ও অবরোধের কর্মসূচিতে প্রাণহানির ঘটনাই ঘটেনি— অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল বাংলাদেশ। মাঝখানে বিএনপি নির্বাচন প্রতিরোধ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ জোট আসন ভাগাভাগি করে ১৫৩টিতে বিনা ভোটে প্রার্থীদের জয়ী করে যে সংসদ গঠন করেছিল, সেটি প্রশ্নবিদ্ধ হলেও পরবর্তীতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তা গ্রহণযোগ্যও করে তোলে। গণআন্দোলন বা গণঅভ্যুত্থানে সেদিন সরকারকে বিদায় করা দূরে থাক অসহযোগ আন্দোলনের নামে বেগম খালেদা জিয়ার হরতাল-অবরোধের ডাক পেট্রলবোমার রাজনীতিতে বুমেরাং হয়ে দেখা দেয়। আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা দূরে থাক, গণঅসন্তোষ তৈরি হয়। বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মী মামলার জালে আটকা পড়ে দলের সাংগঠনিক শক্তির ক্ষয়ই ঘটেনি, রীতিমতো দলটির কোমর ভেঙে যায়।
পরবর্তীতে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি তুলে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিকে পথ হাঁটে। রাজপথের লড়াই ছেড়ে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি ভোট লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ততক্ষণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে জনপ্রিয় দল হওয়া সত্ত্বেও বিএনপির দুঃসময় কেটে যাওয়া দূরে থাক, শনির রাহু যেন আগ্রাসী হয়ে ওঠে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নৃেতত্বে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হওয়াসহ ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দেশ ভাসলেও সরকারি দলের একদল নেতা-কর্মীর উন্নাসিক আচরণ, দলের মাঠ পর্যায়ের অভ্যন্তরীণ বিরোধ, ব্যাংকিং খাতে লুণ্ঠনসহ নানামুখী দুর্নীতি শাসক দলের জনপ্রিয়তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দেয়। কিন্তু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিএনপি ও তার জোট আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় আওয়ামী লীগের সুসময়ের বসন্ত বাতাস বইতে থাকে। দুর্নীতি মামলায় বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ হওয়ার পর বিএনপির পক্ষে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলতে না পারা তাদের ষোলকলা পূর্ণ করে বৃহস্পতি তুঙ্গে ওঠে শাসক দলের। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে নির্বাসিতই নন, আদালতের চোখে একজন দণ্ডিত ফেরারি আসামি। এমন পরিস্থিতিতে একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে সরকারবিরোধী শক্তিশালী ফ্লাটফরমে দাঁড়িয়ে থাকা বিএনপি কার্যত নেতৃত্বহীন। সরকারি দমন-পীড়নের আশঙ্কায় দলটি হঠকারী পথ ছেড়ে অহিংস কর্মসূচির পথে জনমত সংগঠিত ও মানুষের সহানুভূতি আদায়ের পথ নিয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন অনিশ্চিত। এক মামলায় জামিন পেলেও অন্য মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে নিঃসঙ্গ কারাজীবনেই তাকে থাকতে হতে পারে। প্রশ্ন উঠেছে এমন অবস্থায় বিএনপি কী করবে? আগামী ভোট রাজনীতি সামনে রেখে দেশের রাজনীতি কোন পথে হাঁটবে? প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি দল যখন নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে-ময়দানে বিএনপি তখন কালো পতাকা নিয়ে পুলিশের লাল পানির যন্ত্রণা সয়ে দলীয় কার্যালয়ের তিন তলায় উঠে কালো পতাকা নাড়ছে। অনেকে মনে করেন, এ অবস্থা চললে আর বিএনপি অহিংস কর্মসূচি নিয়ে এভাবে পথ হাঁটতে থাকলে জনসমর্থন তাদের দিকে ঝুঁকবে। কিন্তু পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, সরকার এমন সুযোগ বিএনপিকে দেওয়ার জন্য বসে নেই। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ঘরে বা অফিসে বসে আন্দোলন করতে। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন, ওবায়দুল কাদেরকে তিনি রাজনীতির শিক্ষা দিতে পারেননি। শিক্ষক হিসেবে ছাত্রের প্রতি স্নেহসুলভ দৃষ্টি নিয়ে কথাটি বললেও ওবায়দুল কাদের তার শিক্ষকের কথা শুনে মৃদু হেসেছেন। এমাজউদ্দীন একজন রাষ্ট্র দার্শনিক হিসেবে দেশ ও মানুষের কল্যাণে সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের জায়গায় নিতে পারেননি। সেনাশাসনের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিএনপির কট্টর সমর্থক হয়েছেন। জীবনের পড়ন্ত বেলায় তিনি যখন বিএনপি ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্রদূত বা রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্ন থেকে মাঠকর্মীদের পেছনে হাঁটছেন ওবায়দুল কাদের তখন মন্ত্রীই নন, আওয়ামী লীগের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে নিজেকে জাতীয় নেতাদের কাতারে নিয়ে গেছেন। এখানে নষ্ট রাজনীতির ব্যবস্থাপনায় শিক্ষকের শিক্ষা না নিয়ে ছাত্র লাভবানই হয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে কী করবে? অন্ধ হলেও প্রলয় বন্ধ থাকে না। বিএনপি নেতারা আশ্বস্ত হবেন এমন আবহাওয়াও রাজনীতিতে বইছে না দীর্ঘদিন ধরে। নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে আরেক পক্ষ বলছে, খালেদা জিয়াকে নিয়েই তারা নির্বাচনে আসবেন। শাসক দলের দাবার খেলায় দল ভাঙা-গড়ার রাজনীতি সেনাশাসকরাই বেশি খেলেছিলেন। সেনাশাসক জিয়াউর রহমানও আওয়ামী লীগকে ভেঙেছিলেন। আওয়ামী লীগের ওপর কঠিন দমন-পীড়ন রেখেছিলেন। বিএনপি-জামায়াত শাসনামালে দমন-পীড়ন হত্যা ও একুশে গ্রেনেড হামলার মতো ভয়াবহ ঘটনাও ঘটেছে। রাজনৈতিক ইতিহাসের যাত্রাপথে নেতৃত্বহীন খাঁচাবন্দী বিএনপিকে শাসক আওয়ামী লীগ মনের মতো ছাই দিয়ে যেন ধরেছে। বিএনপিকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে খালেদা জিয়া ছাড়াই ঐক্যবদ্ধ ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগটি নির্বিঘ্নে সরকার দেবে এমনটি সাদা মনে কেউ ভাবছেন না। ভ্রূ কুঁচকে নানা আশঙ্কার ও সংশয় প্রকাশ করছেন। বলাবলি হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়া ভোটের আগে যেমন কারামুক্ত হচ্ছেন না। তেমনি তার নির্বাসিত পুত্র তারেক রহমান আরও বড় ধরনের মামলায় দণ্ডিত হতে যাচ্ছেন। আগামী জাতীয় নির্বচন সামনে রেখে কার্যত রাজনীতিতে মাইনাস ওয়ান ফর্মুলাই নয়, জিয়া পরিবারকে বাইরে রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ খালেদা জিয়াই মাইনাস হচ্ছেন না, জিয়া পরিবারেরও অংশগ্রহণের সুযোগ বন্ধ হচ্ছে এই নির্বাচনে। অন্যদিকে নানা মামলায় ও নৈতিক দুর্বলতার কারণে বিএনপির অনেক নেতা সরকারের শিকারে পরিণত হচ্ছেন। এমন সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ সরকার। বিএনপির প্রভাবশালী একজন নেতা যিনি আইনি লড়াইয়ে বাড়ি হারিয়েছিলেন, তিনি সেই বাড়ির ক্ষতিপূরণ নগদ অর্থে পেয়ে যাচ্ছেন এমন গুজবও বাতাসে ভাসছে। কারও ব্যাংক ব্যবসা রক্ষা পাচ্ছে। কারও মামলা থেকে মুক্তি মিলছে। বিনিময়ে বিএনপি ভেঙে একাংশের অংশগ্রহণ ঘটতে যাচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনে। অন্যদিকে কারারুদ্ধ বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের প্রতি অনুগত দলের একটি বৃহৎ অংশ তাদের নেত্রীকে ছাড়া নির্বাচন করবেন না। এই ইস্যুতে অনড় থেকে ভোট বর্জনের পথে হাঁটবেন। এতে আওয়ামী লীগ মনের মতো সংসদ ও আরেক টার্ম নির্বিঘ্নে ক্ষমতায় আসবে। বলাবলি হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি ক্ষমতায় থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের সুযোগটি হাতছাড়া করতে চায় না। ভোটযুদ্ধ সামনে রেখে রাজনীতির শেষ দৃশ্য কীভবে মঞ্চস্থ হয় সেটিই দেখার অপেক্ষা।
লেখক : প্রধান সম্পাদক, পূর্বপশ্চিমনিউজবিডি.কম।
বিডি প্রতিদিন/২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হিমেল
 
                         
                                     
                                                             
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        