আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতি এখন তুঙ্গে। ডিসেম্বর মাসেই
রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। আগামী পাঁচ বছর কে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসবে তার
ক্লিনশিট দেবে জনতা। তাই জনগণের আস্থা অর্জনের পাশাপাশি বাইরের দেশের সাথে সু-সম্পর্ক
তৈরির দিকেও নজর রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর। এরই অংশ হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের
সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান দু'টি রাজনৈতিক দলই ভালো সম্পর্ক তৈরির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দলের নেতকর্মীরা সাম্প্রতিক ভারত সফর সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পরপরই বিএনপি'র সিনিয়র নেতাদের সফর এবং মির্জা
ফখরুল ইসলামের ভারত নিয়ে পজেটিভ এপ্রোচ নিঃসন্দেহে ভারত-বিএনপি সম্পর্কের এক অনন্য
নজির ছিল। আমি বিএনপির জন্য 'অনন্য নজির' এই কারণে বলেছি, এই রাজনৈতিক দলটি বিনা
অযুহাতেই বাংলাদেশে-ভারত বিরোধী রাজনীতির চর্চা করে, সর্বদা দেশ বিক্রির ধোঁয়া তোলে। 
আজ অবধি বাংলাদেশে-ভারত বিরোধী যত অপপ্রচার হয়েছে তার সবকিছুর মূল এজেন্ট বা পালে হাওয়া
লাগানো রাজনৈতিক দলটির নাম বিএনপি। যাই হউক, তারপরেও আমরা ধরে নিয়েছি বিএনপি আগের
অবস্থান থেকে কিছুটা হলেও সরে এসেছে, তাদের বর্তমান অবস্থান অন্তত কিছুটা হলেও পজেটিভ।
কিন্তু তা বুঝি আর বেশিদিন টিকল না! 
ঘটনাটা একটু খুলেই বলছি। আমরা সবাই জানি, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বর্তমানে কারাগারে আছেন। তার বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক প্রমাণিত দুর্নীতির এই অভিযোগ। শুধু তাই না, খালেদা জিয়ার সন্তান লন্ডন প্রবাসী তারেক জিয়াও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত
পলাতক আসামি। খালেদা জিয়ার শাসনামল সম্পর্কে যারা খবর রেখেছেন তাদের হয়তো এটা
জানার কথা, ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত ভয়াবহ সন্ত্রাসের বিস্তার এবং দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত
হয়েছিল আজকের বাংলাদেশ। 
বিএনপি শাসনামলে বাংলাদেশ বিশ্বে টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে শীর্ষস্থান দখল করে যা ছিল জাতি হিসেবে চরম লজ্জার। আর এই দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসের মূল কার্যক্রম পরিচালিত হতো হাওয়া ভবন থেকে। বলে রাখা ভালো, এই 'হাওয়া ভবন' ছিল মূলত খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের বিশ্রামাগার। ২০০০ সালে নগরীর খানিকটা কোলাহলমুক্ত পরিবেশে বনানীতে বিএনপির জন্য একটি অফিস নেন তারেক রহমান!
নাম দেন ' হাওয়া ভবন' ! ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতিই ছিল এই হাওয়া ভবন কেন্দ্রিক এবং সব কাজেই ১০ ভাগ কমিশন দিতে হতো তারেক জিয়াকে। ফলে তারেক জিয়াকে অনেকেই '১০ পার্সেন্ট' নামেও আখ্যা দেন, ভারতের বিরুদ্ধে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাও এই হাওয়া ভবন থেকেই পরিচালিত হয়। অবশেষে বিএনপির পতন হয় এবং ২০০৮ সালে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসে।
প্রায় ১০ বছর খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলা চলমান এবং কিছুদিন আগে আদালত কর্তৃক বেগম
জিয়ার ৬ বছরের সাজা হয়। আমি এতক্ষণ যে কারণে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছি তার মূল জায়গায় এবার
আসছি। 
খালেদা জিয়ার মামলার ক্ষেত্রে একটি নাম ঘুরে ফিরে আসছে আর তা হলো লর্ড কার্লাইল,
ব্রিটিশ নাগরিক লর্ড কার্লাইলকে বেগম জিয়ার আইনী পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে বিভিন্ন সময় সীমাহীন মিথ্যাচার করা কার্লাইল এবার ভারতে এক প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করেছিল যেখানে খালেদা জিয়ার সন্ত্রাস এবং দুর্নীতির পক্ষে সাফাইমূলক
বক্তব্য প্রদানই ছিল তার লক্ষ্য। আর এটা নিয়েই বিগত কয়েকদিন যাবত উত্তপ্ত ছিল
বাংলাদেশের রাজনীতি। দু'টি রাজনৈতিক দলই তার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছে কার্লাইল ইস্যুতে।
প্রথমেই বলে নেই, কার্লাইল ভারতে যাচ্ছে কি না যাচ্ছে তা নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক অনেক সংবাদ
হয়েছে এবং অবশেষে কার্লাইল ভারতের মাটিতে পা রেখেছে কিন্তু সাথে সাথেই ফিরতি ফ্লাইটে লন্ডন
পাঠানো হয়েছে।
লর্ড কার্লাইল এ সপ্তাহেই নয়াদিল্লি সফরের সময় ১৩ জুলাই ফরেন করেসপন্ডেন্ট ক্লাবে
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও কারাদণ্ডের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তার বক্তব্য
দেওয়ার কথা ছিল। তো হঠাৎ করেই গত ৮ জুলাই রবিবার যখন খবর আসলো খালেদা জিয়ার
আইনজীবী লর্ড কার্লাইলকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি, তখন ক্ষুব্ধ হয়ে এক
প্রতিক্রিয়া দেন রুহুল কবির রিজভী। 
রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি'র নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'বাংলাদেশের একটি ভোটারবিহীন সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের ভূমিকা ঔপনিবেশিক শাসকদের মতো, যেন তারা বাংলাদেশে তাদের প্রতিভুদের টিকিয়ে রাখতে উঠে-পড়ে লেগেছে'— এই বক্তব্যের পর ১০দিন আগের বিএনপি আর বর্তমানের বিএনপি'কে যেন ঠিক মেলাতে পারছিলাম না আমরা কেউই।
যারা গত ১০দিন আগেও ভারতের প্রশংসা করে বক্তব্য দিয়েছে তারা আজ এই এক ঘটনাকে নিয়ে এত ক্ষুব্ধ! পরক্ষণেই যখন বিএনপি জানতে পারে, কার্লাইল ভারতে যাচ্ছে এবং আগের সংবাদটি ভিত্তিহীন ছিল
সাথে সাথেই বিএনপি তার বক্তব্য পাল্টে ফেলে এবং ওইদিন বিকেলেই রিজভী ভারতের গুণগ্রাহী হয়ে
বক্তব্য প্রদান করেন। 
প্রথমত, রিজভী সাহেবের এই বক্তব্য ছিল সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং শিষ্টাচার বহির্ভূত। কেন না লর্ড কার্লাইল একজন বিট্রিশ আইনজীবী। তাদের দেশে একজন বিট্রিশ হাউস অফ লর্ডসের মেম্বার যাবেন, তাকে ভিসা না দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের যোগসূত্র খোঁজা বোকামি এবং তাদের জড়িয়ে বক্তব্য দেয়াও হচ্ছে অপরিপক্বতা। তবে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, ভারত অবশ্যই এমন কিছু করবে না যা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক হয়।
এদিকে, বাংলাদেশ সরকারের তীব্র আপত্তি ছিল যেনো দিল্লিতে খালেদা জিয়ার ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইলের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করা হয়। কারণ লর্ড কার্লাইল যদি ভারতের মাটিকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক ক্যাম্পেইন চালান - ঢাকা নিশ্চয়ই তা পছন্দ করবে না! আর এই বার্তা দিল্লীকে ঢাকা আগেই দিয়েছে।
লর্ড কার্লাইল দিল্লিতে আসছেন এ খবর জানাজানি হওয়ার পরই ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন তাদের কাছে আপত্তির কথা জানিয়েছে। এমনকী, দু-তিনদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ভারত সফরে এসে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর এবং রাম মাধবের মতো বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সাক্ষাতের সময় প্রসঙ্গটি উঠিয়েছেন।
অবশেষে পারিপার্শ্বিক বিষয় চিন্তা করে লর্ড কার্লাইলের ১৩ জুলাই দিল্লির ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব বা এফসিসি'র বুকিং বাতিল করা হয় কেননা একই দিনে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতও ক্লাবে আসছেন।
মূলত, এই যুক্তিতে শেষ মুহূর্তে এফসিসি তার বুকিং বাতিল করে দিয়েছে। ফলে লর্ড কার্লাইল নতুন করে ঘোষণা দেন যে, ১২ জুলাই দিল্লিতেই অন্য কোনও জায়গায় সাংবাদিক সম্মেলন করবেন এবং দিল্লি সফর মোটেও বাতিল হচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলা নিয়ে তিনি কথা বলতে চান, সেটাও দিল্লিতে অবশ্যই বলবেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার কোথায়, কয়টায় তিনি মিডিয়ার মুখোমুখি হবেন - সেগুলো প্রকাশ করা হয়নি, যাতে এফসিসি-র মতো তারাও না শেষ মুহূর্তে কোনও কারণে বেঁকে বসে।
ভারত এই ক'দিন ছিল উভয় সংকটে। ভিসা বাতিল অনেকটা কষ্টসাধ্য ছিল কেননা ব্রিটিশ
নাগরিকরা এখন ভারতে যাওয়ার জন্য সফরের অনেক আগেই ই-ভিসা বা ইলেকট্রনিক ভিসার আবেদন
করে রাখতে পারেন, আর সচরাচর তা মঞ্জুরও হয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি। আর একজন প্রবীণ ব্রিটিশ
লর্ড ও আইনজীবীর ভিসা বাতিলের যুক্তিটাও অনেকটা দুর্বোধ্য ছিল। তাই বাংলাদেশ সরকারের
স্পষ্ট আপত্ত্বি সত্ত্বেও দিল্লি লর্ড কার্লাইলের ভারত সফর ইস্যুতে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়ার পথে হেঁটেছে। 
অবশেষে গত ১১ জুলাই বুধবার ভারতের মাটিতে কার্লাইল পা রাখেন এবং ভারত
সরকার সত্য, ন্যায় ও সুন্দরের পক্ষে অবস্থান নেয়। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি
নেত্রী খালেদা জিয়ার ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইলকে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো
হয়েছে। 
কার্লাইল বুধবার গভীর রাতে দিল্লি বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান, তখন ইমিগ্রেশন
কর্মকর্তারা তাকে জানায় যে, ভারত সরকার তার ভিসা প্রত্যাহার করেছে। এরপর তাকে দিল্লির
বিমানবন্দর থেকেই লন্ডনের ফিরতি ফ্লাইটে তুলে দেয়া হয়। যদিও এ ব্যাপারে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
লর্ড কার্লইলকে ভারতে এসে সংবাদ সম্মেলন করতে দেয়ার মানে ছিল দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসবাদের
পক্ষে ভারতের অবস্থানের জানান দেয়া! কেননা কার্লাইল আগেই ঘোষণা দিয়েছিল খালেদা জিয়ার
মামলা নিয়ে উনি কথা বলবেন এবং এই মামলা 'সাজানো ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' এটার পক্ষে উনি কথা
বলবেন, অথচ বাংলাদেশের আদালতে স্পষ্ট প্রমাণিত এই দুর্নীতির অভিযোগ। 
ভারত সরকার তাই কার্লাইলকে এই অনুমতি না দেয়ার অর্থ হলো দিল্লি-ঢাকা সম্পর্কে কোন ছেদ পড়ুক তা ভারত চায় না। একইসাথে দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যে বৃহৎ গণতান্ত্রিক এই রাষ্ট্রের
অবস্থান তা তুলে ধরে দিল্লি! 
লর্ড কার্লাইল ভারতে এসে যদি তাজমহল বেড়াতে যান বা ইন্ডিয়া গেটে হাওয়া খান – কারো কিছুই বলার নেই। কিন্তু দিল্লি সফরকে তিনি যদি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারে কাজে লাগান - তাও আবার পয়সা নিয়ে - সেটা মোটেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে ভাল সঙ্কেত দেবে না। এক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত, লর্ড কার্লাইল খালেদা জিয়ার হয়ে মামলা লড়তে আর্থিকভাবে চুক্তিবদ্ধ। ফলে দিল্লিতে তিনি যে সব কথা বলতেন সেগুলো হতো একটা ' পেইড রাজনৈতিক ক্যাম্পেনে 'র অংশ - যার নিশানা হতো বাংলাদেশ সরকার। তাই বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অফিসিয়ালি মিথ্যাচার করার কোন সুযোগ ভারত সরকার করে দিতে পারে না।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার যেভাবে তাদের ভূখণ্ডকে ভারত-বিরোধী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত হতে দেয়নি, সেভাবে ভারতও দিল্লির মাটিকে বাংলাদেশ-বিরোধী প্রচারের জন্য ব্যবহৃত হতে দেয়নি। তেরঙ্গা-
লাল-সবুজ সম্পর্কের এই যাত্রা বন্ধ হয়ে যাক তা ভারত-বাংলাদেশ কেউই চায় না, তা এই ঘটনার
মাধ্যমেই স্পষ্ট।
ব্যক্তিগতভাবে লর্ড কার্লাইল মিস ডায়ানার হত্যা রহস্যের মামলা লড়লেও এই উপমহাদেশে তিনি
গণহত্যাকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বহুবার। 
সুপ্রীমকোর্ট ২০১৬ সালের ৮ মার্চ জামায়াতের নেতা মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখার পর লর্ড কার্লাইল বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন। যেখানে সেই গণহত্যাকারীর পক্ষাবলম্বন করেছিলেন এই আইনজীবী। এসব নানাবিধ কারণে বাংলাদেশের মানুষের আপত্তি রয়েছে এই আইনজীবীর ক্ষেত্রে। এমনকি যখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে তাকে মনোনীত করে তখন দেশে-বিদেশে অনেক সমালোচনাও হয়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এখানে উত্থাপন করা যায়, কার্লাইল ভারতকে কেনো তার ভেন্যু হিসেবে
বেছে নিয়েছে! বাংলাদেশ কেন নয়? কার্লাইলের ভিসা কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হয়নি বাংলাদেশ সরকার
থেকে তবে ভেন্যু কেনো দিল্লি! যদিও কার্লাইল বলেছে, ভিসা প্রত্যাখ্যাত হয়নি কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে
তাকে বাধা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে না এসে লন্ডনে বসেই উনি বাধা পেয়েছেন এবং এই দেশে আসছেন
না! এটা একদম ঠুনকো যুক্তি। মূলত আন্তর্জাতিকভাবে একটা অপপ্রচারের জন্যই দিল্লিকে বেছে
নেয় বিএনপি। 
বিবিসি বাংলার তথ্যমতে, ঢাকা থেকে বিএনপির সিনিয়র কিছু নেতা খালেদা জিয়ার অপর
আইনজীবীরাও লর্ড কার্লাইলের সঙ্গে দিল্লীতে যোগ দেবার কথা ছিল। তার মানে এটা স্পষ্ট,
কার্লাইলের এই সফর মূলত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এক প্রোপাগান্ডামূলক সফর ছিল যা দিল্লি-ঢাকা
সম্পর্কে ফাটল ধরাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতো। 
বিএনপি’র আত্মবিশ্বাস ছিল দিল্লি এক্ষেত্রে কোন বাধা দেবে না কেননা গত মাসেই দিল্লিতে এসে ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও থিঙ্কট্যাঙ্কের সঙ্গে মতবিনিময় করেছিল বিএনপি-র একটি তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল।
ভারত সম্পর্কে বিএনপি তাদের মনোভাব বদলাতে চাইছে সেই বার্তাও দিয়েছিল। কিন্তু ভারত সরকার
বিএনপি'র অবস্থানকে যাচাই করতে গিয়ে কখনোই দুর্নীতির পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না,
সন্ত্রাসবাদের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না, গণহত্যাকারীর পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না- আর তাই
কার্লাইলের এই সফরকে আটকে দিয়েছে দিল্লি। ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভারত সরকারকে কার্লাইলের
ব্যাপারে সময়োচিত সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য। 
সবশেষে আশার বাক্য দিয়েই আজকের এই লেখা শেষ করছি, 'গণভবন' থেকে 'জনপথ রোড' এর দূরত্ব কমে শূন্যে নেমে আসুক, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় স্থান পাক।
লেখক- রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
বিডি প্রতিদিন/১৩ জুলাই ২০১৮/আরাফাত
 
                         
                                     
                                                             
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        