মানুষটির নাম মোহাম্মদ ইয়ার হোসেন (৪৭)। বাড়ী ঢাকার ধামরাই। দীর্ঘ ২০/২২ বছর কুয়েতে আছেন। কাজ করতেন একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে। গত তিন মাস পূর্বে প্রতিদিনকার মতো সারাদিন কর্মব্যস্ততা শেষে রাতে ঘুমাতে যান। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন শরীরের এক পাশের হাত ও পা নাড়াচাড়া করতে পারছেন না। প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে জীবন্ত এক মূর্তিতে পরিণত হন।
শুরু হলো একজন রেমিটেন্স যোদ্ধার মানবেতর জীবনযাপন, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সোনার হরিণ ধরা বীরের জীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।
সেই থেকে সালমিয়া মমতাজ হোটেলের সামনেই দিন রাত কাটান। একটি চেয়ারে বসে থাকেন সারাদিন, রাতেও হোটেলের সামনের মেঝেতে ঘুমান। নিজে চলাফেরা করতে পারেন না, আশেপাশের দয়াবান কারও সহযোগিতায় খাওয়া-দাওয়াসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারেন। অসুস্থ বলে কারও বাসায় আশ্রয় হয়নি।
এখনো বিয়ে করেননি। মা-বাবা বেঁচে নেই, দেশে ভাই-বোন সবাই নিজ সংসার নিয়ে ব্যস্ত। কর্ম জীবনের জমানো অর্থ দিয়ে দেশে একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন। ওই বাড়িতে এখন তার ভাই থাকেন। তিনি বলেন, 'ভাই বলেছে দেশে চলে যেতে।'
এখন দেশে যাওয়ার প্রহর গুনছেন, এদিকে আকামা নেই ৬/৭ মাস। কোম্পানি নাকি পলাতক হিসেবে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো অবস্থা।
কুয়েত বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর আব্দুল লতিফ খান আশ্বাস দিয়েছেন, আইন অনুযায়ী দূতাবাসের মাধ্যমে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।
আব্দুল মান্নান নামে মোহাম্মদ ইয়ার হোসেনের এক সহকর্মী কোম্পানি থেকে পাসপোর্ট উঠিয়ে এনেছেন। দেশে ফেরার টিকেট কেনার টাকা জোগাতে সবার কাছে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে আহবান করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/১৩ মে, ২০১৭/ফারজানা