প্রতি বছরের মতো এবারও মালয়েশিয়ায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। মালয়েশিয়ায় দিবসটিকে বলা হয় ‘মওলিদুর রাসুল’ অর্থাৎ নবীজীর জন্মদিন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেন দেশটির মুসলিমরা।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে পুত্রাজায়া আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
‘পেম্বাংগুন উম্মাহ মাদানি’ শীর্ষক এ সমাবেশে মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান ইব্রাহিম এবং মহামান্য রাণী রাজা জরিথ সোফিয়া অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী দাতিন সেরি ড. ওয়ান আজিজাহ ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মন্ত্রী (ধর্ম বিষয়ক) দাতুক ড. মোহাম্মদ নাঈম মোক্তারও সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশে সমাজে ঐক্য গড়ে তুলতে নবী মুহাম্মদ (সা.) এর পথ অনুসরণ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাজা সুলতান ইব্রাহিম। উপস্থিত হাজার হাজার মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইসলামি আইন এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মহৎ মূল্যবোধ ও আদর্শ মেনে চললে মালয়েশিয়া সত্যিকার অর্থে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাবে।
প্রধানমন্ত্রীর ধর্মবিষয়ক দফতরের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত সমাবেশ স্থলে হাজারো কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছিল নবীর দরুদ ও সালাম। এতে অংশ নেন বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী শতাধিকের বেশি দল। সব মিলে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় এদিন মসজিদ মাদরাসা ও স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও প্রতি বছর এ সমাবেশে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় মওলিদুর রাসুল পুরস্কার তুলে দেন রাজা সুলতান ইব্রাহিম।
সেখানে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে বেশ কয়েকজনের হাতে মওলিদুর রাসুল পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ বছর পুরস্কারপ্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা হলেন, তাবুং হাজী বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুল রশিদ হুসেন তোকোহ পেরদানাকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত, উদ্যোক্তা এবং সামাজিক মিডিয়া প্রভাবশালী খায়রুল আমিং টেকনোক্র্যাট বিভাগে এবং অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিন ট্যান চমৎকার নবদম্পতি (ধর্মান্তরিত) বিভাগে মওলিদুর রসুল পুরস্কার প্রদান করা হয়।
প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রাজায়ার পাশাপাশি দেশটির সারওয়াক, জোহর, মেলাকা, নেগেরি সেম্বিলান, তেরেঙ্গানু, পেরাক, কেদাহ, পাহাং, সেলাঙ্গর ও পেনাং প্রদেশসহ সারাদেশে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত হচ্ছে। এসময় র্যালিতে অংশ নেন সব বয়সের হাজার হাজার মানুষ। এছাড়াও কোথাও কোথাও প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
প্রতিটি সভা-সমাবেশ ও র্যালীতে নির্যাতিত ফিলিস্তিন জনগণসহ সকল মুসলিম উম্মাহর শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন