আনন্দ-উৎসব ও বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ পরিবেশে কানাডার টরন্টোতে শেষ হলো ৮ম টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৫। চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হওয়া পাঁচদিনের এই উৎসব শুরু হয়েছিল গত ২৪ আগস্ট (সোমবার), টরন্টোর ২২ লেবোভিক অ্যাভিনিউতে অবস্থিত সিনেপ্লেক্স ওডিয়ন-এ।
অন্য তিনদিনের প্রদর্শনী (২৫-২৭ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হয় টরন্টোর ৩০০০ ড্যানফোর্থ অ্যাভিনিউর ‘মাল্টিকালচারাল ফিল্ম স্ক্রিনিং সেন্টার’-এ। ২৬ আগস্ট ছিল শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও বিশেষ সেশন।
এ বছরের উৎসবটি উৎসর্গ করা হয় বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নির্মাতা ঋত্বিক ঘটক–এর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে। উৎসব উদ্বোধন করেন ঘটকের বোনের মেয়ে ও প্রবাসী শিক্ষিকা রীনা চক্রবর্তী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্কারবরো সাউথওয়েস্ট-এর এমপিপি ডলি বেগম, সিটি কাউন্সিলর পার্থি কানডেভাল ব্যারিস্টার চয়নিকা দত্ত, অন্টারিও লিবারেল পার্টির সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হাফিজ।
স্বাগত বক্তব্য দেন উৎসবের সমন্বয়ক ও টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনিস রফিক, এবং সমাপনী বক্তব্য দেন ফোরামের সভাপতি ও উৎসব পরিচালক এনায়েত করিম বাবুল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন মৈত্রেয়ী দেবী ও সুকন্যা চৌধুরী।
ফেস্টিভ্যালের শেষ দিনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ব্রোকার শেখ হাসিব হোসেন, সমাজসেবক শহীদ খন্দকার টুকু, ব্যারিস্টার জয়ন্ত সিনহা, এমপি বিল ব্লেয়ার-এর প্রতিনিধি সারোয়ার চৌধুরী, তরুণ রাজনীতিবিদ তানভীর শাহনওয়াজ
অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন গৌতম শিকদার ও স্বেচ্ছাসেবক অরুনিম।
চলতি বছরের আসরে ২৬টি দেশের ৪৪টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। জমা পড়েছিল প্রায় ৪ হাজার চলচ্চিত্র, যা এসেছিল ১২২টি দেশ থেকে। উৎসবের পুরো আয়োজনে কাজ করেছেন ৩৫ জন স্বেচ্ছাসেবক।
ঋত্বিক ঘটক (জন্ম ৫ নভেম্বর ১৯২৫, ঢাকা) তাঁর চলচ্চিত্রে বারবার তুলে ধরেছেন দেশভাগে শেকড়ছেঁড়া মানুষের বেদনা, সংকট ও সংগ্রাম। তাঁর কালজয়ী চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে: অযান্ত্রিক (১৯৫৮), মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০), সকোমলগান্ধার (১৯৬১), সুবর্ণরেখা (১৯৬২), তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩), যুক্তি তক্ক আর গপ্পো (১৯৭৪)।
ঘটকের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে তাঁকে উৎসর্গ করে এই উৎসব আয়োজন করতে পারায় আয়োজক টরন্টো ফিল্ম ফোরাম এর সদস্যরা নিজেদের গর্বিত বলে জানান।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে কানাডার ১৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিষ্ঠিত হয় টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। শুরু থেকেই এটি আন্তর্জাতিক স্বাধীন ও বিকল্পধারার চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একটি গ্রহণযোগ্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেন জিসান সুলতানা।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ