শিরোনাম
- যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রস্তাব ভারতের
- টসে জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, বাদ লিটন-তাসকিন
- ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে হারতে দেব না, ঘোষণা চীনের
- কার্নিশে ঝুলে থাকা তরুণকে গুলি: সাবেক এডিসি রাশেদসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ
- বেতাগীতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
- দাবানলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায়ে তুরস্কে গ্রেফতার ১০
- শাজাহানপুরে ৩১ দফা বাস্তবায়নে কৃষকদলের প্রচার অভিযান
- কারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, জানালেন অ্যাটর্নি জেনারেল
- গুরুতর অসুস্থ লঞ্চযাত্রীকে দ্রুত চিকিৎসাসেবা দিল কোস্ট গার্ড
- কক্সবাজারে চার কিশোর নিখোঁজ
- নালিতাবাড়ীতে বিদ্যুৎস্পর্শে বন্যহাতির মৃত্যু
- আগে বিচার ও সংস্কার, তারপর নির্বাচন : নাহিদ
- ছদ্মবেশ ধারণ করেও বাঁচতে পারেননি ইরানি যে জেনারেল!
- সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন
- ‘অপারেশন সিঁদুরে তিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত’
- আলোচনায় প্রস্তুত হামাস, আগামী সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে
- ইহুদি খলনায়ক ‘শাইলক’ মন্তব্যে বিতর্কে ট্রাম্প, কিন্তু কেন?
- গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতিই সৌদি আরবের প্রধান অগ্রাধিকার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল
- ডিবি পুলিশকে কুপিয়ে জখম মাদক কারবারিদের, মামলা
- দেড় বছরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা
নিউইয়র্কে আনন্দ-উৎসবে উচ্চারিত হলো বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার উপাখ্যান
এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে
অনলাইন ভার্সন

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্য আনন্দমূখর পরিবেশে নিউইয়র্কে উদযাপিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের মিলনায়তনে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বিপুলসংখ্যক প্রবাসী, জাতিসংঘের আমন্ত্রিত অতিথি এবং স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বর্ণিল এ আনন্দ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যৌথভাবে এই উৎসবের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি ছিলেন জাতিসংঘের দু’টি ইভেন্টে যোগদান উপলক্ষে নিউইয়র্ক সফররত বাংলাদেশের দু’টি পৃথক ডেলিগেশনের প্রধান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এমপি এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। তারা উভয়েই বাংলাদেশের এই অসমান্য অর্জনের মাহেন্দ্রক্ষণে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, 'যুদ্ধ বিধ্বস্ত সেই বাংলাদেশ হতে আজকের এই এলডিসি ক্যাটাগরি উত্তরণ-যার জন্য বাংলাদেশকে পাড়ি দিতে হয়েছে বহু চড়াই উৎরায়। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নদর্শী নেতৃত্বে, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাহসী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে। আর অর্জনের এই উপাখ্যানে মিশে আছে উন্নত ভবিষ্যত ও সমৃদ্ধি অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের অদম্য স্পৃহা যার পরতে পরতে রয়েছে জাতির পিতার প্রদর্শিত পথ এবং তারই স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমাদের দৃঢ় প্রত্যয়'।
বাংলাদেশের এই অবস্থানে আসার পেছনে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের অবদানের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের এই উত্তরণকে টেকসই করতে প্রবাসীগণ স্ব স্ব অবস্থানে থেকে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবেন বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
নিষ্ঠুরভাবে সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত ও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। জাতির পিতাকে হত্যার পর নেতৃত্ব শূন্য বাংলাদেশের হাল ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের বিস্ময়ে পরিণত করেছে বলেও জানান তিনি।
এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে বাংলাদেশের এই উত্তরণে দেশের নারীদের অসামান্য ভূমিকার কথা তুলে ধরে চুমকি বলেন, 'এই অর্জনের অভ্যন্তরের কাহিনীতে রয়েছে বাংলাদেশের নারীরা এবং অবশ্যই তারা আগামীদিনের অর্জনেও মূল দৃশ্যপটে সামনে থাকবেন'।
বাংলাদেশের জনগণ আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে বলেও প্রত্যাশা করেন দুই প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রীদ্বয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রোরেলসহ দেশের মেগা প্রকল্পসমূহের কথা তুলে ধরেন। উঠে আসে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, গ্রামীণ উন্নয়ন, অবকাঠামো, তথ্য-প্রযুক্তি, যুব উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন ও বৈদেশিক সম্পর্কসহ উন্নয়নের বিভিন্ন খাতের সাফল্যের কথা।
তারা বলেন, সকলকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশ সরকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স-এ জানুয়ারি ২০১৮ এর তালিকায় বাংলাদেশ ৩৪তম অবস্থানে উন্নীত হয়েছে যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষস্থান।
বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রীদ্বয়।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শিতাসম্পন্ন নেতৃত্বের প্রশংসা করে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান এনডিসি বলেন, 'বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমায় এটি একটি মাইলফলক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার সমাজের সকলকে সাথে নিয়ে অগ্রমূখী যে উন্নয়ন কৌশল বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, এই অর্জন তারই প্রতিফলন'।
জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি), ভূ-বেষ্টিত স্বল্পোন্নত দেশ (এলএলডিসি) ও উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রসমূহ (সিডস্) সংক্রান্ত কার্যালয়ের পরিচালক হেইডি ফক্স বলেন, 'এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দ বোধ করছি। এলডিসি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তিনটি ক্যাটাগরিতেই বিপুল মার্জিন নিয়ে উর্ত্তীর্ণ হয়েছে। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত খাতসহ বিভিন্ন খাতে অসামান্য অগ্রগতি সাধন করেছে। বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রতিঘাত ও প্রতিকুলতা মোকাবিলা করে এ যেন ঘুরে দাঁড়ানোর এক সাফল্যগাঁথা'।
জাতিসংঘের মূলধন উন্নয়ন তহবিলের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি জেভিয়ার মিসিয়ন বলেন, 'বাংলাদেশ ১৯৭৫ সালে এলডিসিতে যোগ দিয়েছিল। সেই দিন আর আজকের মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান। এই দেশটি সত্যিকারভাবে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছে। যা বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় আয়, মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সংবেদনশীলতার মধ্যে দৃশ্যমান'।
আমন্ত্রিত অতিথিরা উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ সফলতার সাথে মোকাবেলা করে বাংলাদেশ উন্নয়নকে টেকসই ও স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। এক্ষত্রে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেও তারা উল্লেখ করেন।
প্রবাসীদের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর এ অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে আরও ২০ বছর আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হতো। আজ এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে’।
তিনি দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেন, ‘সামনের দিনগুলোতেও প্রবাসীরা বঙ্গবন্ধু কন্যার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সমর্থক হিসেবে কাজ করে যাবে। শুধু তাই নয়, সামনের নির্বাচনেও নৌকা মার্কার প্রার্থীদের জয়ী করতে প্রবাসীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।’
এ উৎসবে কাজী রোজী এমপি, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব কাজী মাফরূহা সুলতানাসহ চলতি সিএসডব্লিউ’র ৬২তম অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ ডেলিগেশনের অন্যান্য সদসগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/২৪ মার্চ ২০১৮/এনায়েত করিম
এই বিভাগের আরও খবর