যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেট ডিস্ট্রিক্ট-৫ থেকে জয়ী বাংলাদেশি শেখ রহমান চন্দন বলেছেন, অনেকেই বাংলাদেশের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছেন এই প্রবাসেও। এতে দোষের কিছু নেই। তবে পাশাপাশি মার্কিন রাজনীতিকেও ধারণ করতে হবে। কারণ, এই সমাজের আপনিও একটি অংশ। সেখানে সোচ্চার থাকতে হবে নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা আদায়ের স্বার্থে। দেশীয় রাজনীতির বিভাজন যেন কমিউনিটিকে গ্রাস না করে। তাহলে সর্বনাশ। গণতান্ত্রিক সমাজে সকলেই অধিকার রয়েছে ভিন্নমত পোষণের। তাই বলে তাকে হিংসা-বিদ্বেষের হাতিয়ারে পরিণত করা যাবে না। বিগত দিনগুলোতে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি অবলোকন করেছি আমরা। এখন সময় হচ্ছে জাতিগত-ভাষাগত ঐক্য রচনার মাধ্যমে বহুজাতিক এ সমাজে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করার।
বাংলা নতুন বছর উপলক্ষে নিউইয়র্কে দুটি সমাবেশে বক্তব্য দেন সিনেটর শেখ চন্দন। কিশোরগঞ্জের সন্তান চন্দন ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। ৩৮ বছর ধরে মার্কিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ডেমক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটিরও নির্বাচিত সদস্য তিনি।
রবিবার নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে তিনি বলেন, শুধু বাঙালি হয়ে থাকলে চলবে না। বাঙালিত্ব হৃদয়ে ধারণ করেই আমেরিকান হতে হবে। কারণ, এটি তো বাংলাদেশ নয়। বহুজাতিক সমাজের সাথে মিশে যেতে পারলেই জননেতা হওয়া সম্ভব।
শেখ রহমান চন্দন উল্লেখ করেন, নির্বাচনে জয়ী হতে সর্বপ্রথম কমিউনিটিভিত্তিক ঐক্য গড়তে হবে। নিজেরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তাহলে নিকট প্রতিবেশী ভিনদেশীরাও এগিয়ে আসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। এটি হচ্ছে নির্বাচনে বিজয়ের অন্যতম পূর্বশর্ত। যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে ভাগ্য গড়ার উর্বর একটি ভূমি। বাংলাদেশি আমেরিকানরাও এমন উদাহরণ তৈরী করেছেন বহুজাতিক এ সমাজে। বিশেষ করে আমাদের সন্তানদেরকেও সহায়তা দিতে হবে। অভিভাবক হিসেবে এ দায়িত্ব সকলেরই। তাদের মধ্য থেকেও সিনেটর, কংগ্রেসম্যান, এমনকি প্রেসিডেন্ট হতে পারে।
চন্দন বলেন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেড়েছে। তাই সকলের মধ্যে নির্ভেজাল ঐক্য থাকলে যে কোন নির্বাচনে জয়ী হবার পথ সুগম হতে পারবে। ন্যূনতম একটি ইস্যুতেও হতে পারে এ ঐক্য। ঐক্যের ব্যাপারে নিউইয়র্কের কন্সাল জেনারেলও উদ্যোগ নিতে পারেন। কিংবা যে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীও এগিয়ে আসতে পারেন। এটি হচ্ছে সময়ের দাবি। আমাদের সন্তানেরা বড় হচ্ছে। তাদের কথা ভেবেই ঐক্যবদ্ধ হবার বিকল্প নেই। তাহলে ওরাও শক্তি পাবে, বলিষ্ঠতার সাথে উচ্চারণে সক্ষম হবে যে, আমরা বাঙালির উত্তরাধিকারি।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশি কিংবা দক্ষিণ এশিয়ান অথবা মুসলমান, এমন পরিচয়ে উপস্থাপন করলে কখনোই নির্বাচিত হতে পারতাম না। কারণ আমার এলাকায় ভোটারের সিংহভাগই এসব অঞ্চল বা ধর্মের নন। সে জন্যে আমাকে ঐসব ধর্মবিশ্বাসীগণের যাবতীয় কাজে পাশে থাকতে হয়েছে। তাদের যে কোন সমস্যাকে নিজের বিবেচনায় নিয়েছি। এভাবে তাদের মন জয় করেছি বলেই নির্বাচনে আমি জয়ী হতে পেরেছি।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা