বিপুল উৎসহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে কানাডাবাসী উদযাপন করলো দেশটির ১৫২তম জন্মদিন। বছরের বেশীর ভাগ সময় বরফাচ্ছন্ন থাকা কানাডার জন্মদিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলো প্রবাসী বাঙ্গালীরাও।
আয়োতনের দিক থেকে কানাডা ৯ হাজার ৯শ' ৮৫ মিলিয়ন কিলোমিটার হলেও জনসংখ্যা মাত্র ৩৬ মিলিয়ন। যার রয়েছে ১০টি প্রভিন্স এবং ৩টি টেরিটোরিজ। ১৯৭১ সালে কানাডাই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ঘোষণা দেয় মাল্টিকালচারিজমের, যার মূলমন্ত্র হলো সকল নাগরিকের থাকবে সমান অধিকার ও দায়িত্ব। যার ফলস্বরুপ দেশটির জন্মলগ্ন থেকে এ পর্যন্ত ১৭ মিলিয়নের বেশী লোক অভিবাসী হয়ে দেশটিতে এসে স্থায়ী ভাবে বসবাস করছে। কানাডা শান্তি রক্ষায় সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে।
কানাডার ইমিগ্রেশন সংস্থার হিসেব অনুযায়ী প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ অভিবাসন প্রত্যাশী পাড়ি দেয় কানাডায়। এক সমীক্ষায় দেখাগেছে কানাডার বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা যোগাযোগ ব্যাবস্থা, জীবনের নিরাপত্তা, স্থীতিশীল অর্থনীতি, শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থার কারণে দেশ হিসেবে বিশ্বের সকলের কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং আলবার্টা প্রিমিয়ার জেসন কেনী পৃথক পৃথক শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন।
স্থানীয় জেনেসিস সেন্টার প্রেইরি উন্ডসপার্ক, রকিভিউ এলাইন্স, ডাউন টাউনসহ ক্যালগ্যারীর প্রায় প্রতিটি স্থানেই ছিলো উপচে পড়া ভিড়। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে মুল অনুষ্টান শুরু হয়। এরপর কানাডার জন্মদিনের কেককাটা ছোটছোট শিশু-কিশোরদের ফেসপিন্টর, জর্লি জার্ম্পসহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা এবং কানাডার আদিবাসীদের শারীরিক কসরত ছাড়াও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়।
ক্যালগেরির এবিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এবং বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ড. মোঃ বাতেন বলেন, দূর প্রবাসে থাকলেও মাতৃভূমি আমাদের হৃদয়ে, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা আমাদের আশার আলো দেখায়। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম রোল মডেল দেশ। কানাডার জন্মদিনে আমাদের প্রত্যাশা প্রচুর সংখ্যক বাঙ্গালীরা এদেশে আসুক, জ্ঞানার্জন এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখুক।
বেঙ্গল ফার্মেসি ও কমিউনিটি আর এক্স বাংলাদেশি ফার্মেসী গ্রুপের চেয়ারম্যান ও স্বত্তাধিকারী ড. ইব্রাহিম খান বলেন, বিশ্ববাসী আজ বাংলাদেশ নিয়ে ভাবছে। আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রবাসী হয়েও আমরা বাংলাদেশ কে নিয়ে গর্ব করি, অহংকার করি। বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ও কানাডার দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে। কানাডার ১৫২তম জন্মদিনে এটাই আমার প্রত্যাশা।
ক্যালগেরির ফ্যামেলি ফিজিশিয়ান ডা. মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আমরা আনন্দিত যে কানাডায় বসে কানাডার ১৫২ তম জন্মদিনে অংশগ্রহণ করতে পারছি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আরো আরো প্রচুর সংথ্যক বাংলাদেশিরা এদেশে এসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করুক এমনটাই কামনা করছি।
আইসিডিসি'র পরিচালক এ্যান্থনি জ্যাকব বলেন, বাংলাদেশ যেমন আমাদের অহংকার পাশাপাশি কানাডাও আমাদের কাছে অহংকার, কানাডার জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, বাংলাদেশকে যে কটি দেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল কানাডা তাদের মধ্যে অন্যতম দেশ।
১৯৭১ সালে যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশকে যে সকল দেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলো তাদের মধ্য অন্যতম দেশ কানাডা। সেই কানাডার জন্মদিনেই দেশটির আরো উত্তোরত্তোর সমৃদ্ধি হোক, প্রচুর সংখ্যক বাঙ্গালীরা এখানে এসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং প্রবৃদ্ধিতে বিরাট ভুূমিকা রাখুক এমনটাই প্রত্যাশা এখানকার প্রবাসী বাঙ্গালীদের।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন