১৬ নভেম্বর, ২০১৯ ১৮:১০

আমেরিকায় নতুন প্রজন্মের বাঙালির অভিযাত্রায় 'বাপ'

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে :

আমেরিকায় নতুন প্রজন্মের বাঙালির অভিযাত্রায় 'বাপ'

নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশিদের যাত্রা শুরু হলো। প্রত্যাশার পরিপূরক অভিযাত্রায় তারা সামিল হলেন। সংগঠিত হলেন ‘বাংলাদেশি আমেরিকান ফর পলিটিক্যাল প্রগ্রেস’ অর্থাৎ ‘বাপ’ ব্যানারে। নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণকারি অথবা বেড়ে উঠা তরুণ-তরুণীরা দিপ্ত প্রত্যয়ে ঘোষণা করলেন মূলধারার রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে নিজেদের একজনকে বিজয়ী করার। পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে সকলকে প্রগতিশীল চিন্তা চেতনায় উজ্জীবিত করে সৎ মানুষকে বিভিন্ন স্তরে জয়ী করার জন্যে নিরন্তরভাবে সোচ্চার থাকার সংকল্পও ব্যক্ত করা হলো কমিউনিটির জন্যে নতুন ইতিহাসের জন্মদানকারী তরুণ-তরুণীরা। 

নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে কাবাব কিং রেস্টুরেন্টের মিলনায়তনে গত বুধবার সন্ধ্যায় নতুন এ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অভিভাবকেরাও ছিলেন। এসেছিলেন মূলধারার রাজনীতিকরাও। তাহমিনা আর মৌমিতার সঞ্চালনায় সংগঠনের প্রেক্ষাপট উপস্থাপন করেন ডেমক্র্যাটিক পার্টির তৃণমূলের সংগঠক রাসেল রহমান। কয়েকমাস আগে কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট এটর্নীর বিশেষ নির্বাচনে টিফানি কাবানের পক্ষে মাঠে ছিলেন রাসেলসহ অর্ধ শতাধিক তরুণ-তরুণী। সকলেই বাঙালি প্রজন্ম এবং নিউইয়র্কের বিভিন্ন কলেজ-ভার্সিটিতে অধ্যয়নরত অথবা পেশাগত জীবনে প্রবেশকারী। প্রগতিশীল চেতনার প্রার্থী কাবান পরাজিত হয়েছেন মাত্র ৪৮ ভোটে। এ নিয়ে অনেকে বিতর্ক রয়েছে স্বচ্ছ নির্বাচনের। তবে উদারতা প্রদর্শন করে পরাজয় মেনে নিয়েছেন কাবান। সেই কাবানও এসেছিলেন বাঙালি প্রজন্মের জেগে উঠার এই সমাবেশে। তার জন্যে তৃণমূলে ভোট প্রার্থনার অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের সংগঠিত এ ঘটনাকে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেন। মা-বাবার আমেরিকান স্বপ্ন পূরণে নতুন প্রজন্মের গুরু দায়িত্ব গ্রহণের অবিস্মরণীয় ঘটনাকে সচল রাখার আহ্বানও জানান টিফানি কাবান। 

এ সময় বাপের কর্মচেতনা উপস্থাপন করেন আরিফউল্লাহ। তিনি বলেন, ব্যবসায়ী-শিল্পপতি-ধনীক শ্রেণির কবল থেকে মার্কিন রাজনীতিকদের মুক্ত করতে পারলেই সহজ-সরল আর কঠোর পরিশ্রমী অভিবাসীদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটবে খুব সহজে। আমরা সে পথেই চলতে চাই। আরিফ বলেন, আমরা অনেকের জন্যে কাজ করেছি, করছি। শুধু অন্যের বিজয় মালা আনতে থাকবো কেন, নিজেরাও সেটি পাবার অধিকার রাখি। সেজন্যেই আজকের এ সংগঠন। আমরা নিকট প্রতিবেশী ভিন্ন ভাষা-বর্ণের মানুষের সাথেও সম্পর্ক রচনা করবো এবং সংঘবদ্ধভাবে ভোট যুদ্ধে নিজেদের বিজয় ছিনিয়ে আনবো। 
আরিফ অকপটে উল্লেখ করেন, নিজেরা সৎ থাকবো, সৎ ব্যক্তিদের প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাবো। তাহলেই প্রশাসনে স্বচ্ছতা আসবে, দুষ্ট ও লোভী ব্যবসায়ীরা জয়ী হতে পারবে না। এটি হচ্ছে আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। আরিফ বলেন, কমিউনিটির লোকজনকে আমরা সজাগ করবো এবং ভোট যে অমূল্য সম্পদ অধিকারের প্রশ্নে-সেটি জানাবো। 

অনুষ্ঠানে বাপের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যগণকে বিপুল করতালির মধ্যে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। তারা হলেন রাসেল রহমান, আরিফউল্লাহ, তাহমিনা, ফারহানা হানিপ, রোকসানা আলী, মৌমিতা আহমেদ, তীর্থ দত্ত, মৌমিতা জামান, আবেদা খান, নওরীন আকতার, ইমতিয়াজ হোসেন, মেরি জুবাইদা, জয় চৌধুরী প্রমুখ। 

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের নির্বাচনে দুর্দণ্ড প্রতাপশালী কংগ্রেসম্যান যোসেফ ক্রাউলিকে ধরাশায়ী করে আলেক্সান্দ্রিয়া করটেজের বিজয় ছিনিয়ে আনতে এসব তরুণ-তরুণীর বড় একটি গ্রুপ মাঠে ছিলেন। এর আগে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বার্নি স্যান্ডার্সের পক্ষে ভোট প্রার্থনায় ঘরে ঘরে গেছেন। সে সব অভিজ্ঞতাকে অবলম্বন করে নিজের কমিউনিটির ভাগ্য উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ হলেন বাপ ব্যানারে। 

বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর