সেই মা-বাবা-বোন আর নানীর পাশেই কবর হচ্ছে ঘাতক দুই ভাইয়ের। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় টেক্সাস স্টেটের ডালাস সিটি সংলগ্ন এলেন মসজিদে সকলের জানাজা শেষে বিকেল ৪টায় ডেন্টন মুসলিম সিমেট্রিতে দাফন সম্পন্ন হবে। ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব নর্থ টেক্সাসের সভাপতি হাসমত মোবিন বুধবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, মা-বাবা-বোন-নানীর জন্যে দুটি করে মোট ৮টি বুলেট ব্যবহার করা হয়। এরপর দুটি বুলেট দিয়ে একভাই আরেক ভাইকে হত্যা করেছে।
মঙ্গলবার বাবাসহ দু’ভাইয়ের লাশ এবং বুধবার মা-বোন-নানীর লাশ হস্তান্তর করা হয় স্বজনদের কাছে। তাদের দাফনের ব্যয় আপাতত: স্থানীয় মসজিদসমূহ প্রদান করছে। পরবর্তীতে তহবিল সংগ্রহ করে সে অর্থের সমন্বয় করা হবে বলেও উল্লেখ করেন হাসমত।
এদিকে, ৭ এপ্রিল বুধবার সন্ধ্যায় টেক্সাসের ডালাস সংলগ্ন এলেন সিটির সেলিব্রেশন পার্কে নিহতদের স্মরণে ‘মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি’তে সিটি মেয়র কেন ফাক-সহ দু’শতাধিক শোকার্ত মানুষের সমাগম ঘটে। এতে স্মৃতিচারণকালে ট্র্যাভেল ব্যবসায়ী শাহীন হাসান বলেন, সন্তানের ব্যাপারে অভিভাবকের আন্তরিক হতে হবে। তাদের সময় দিতে হবে। জোর করে কোনকিছুই চাপিয়ে দেয়া ঠিক নয়। তাহলেই এমন দুঃখজনক পরিস্থিতির অবতারণা হবে না।
সিটি মেয়রও একই আহবান জানিয়ে বলেছেন, কারো কোন সমস্যা হলে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব নর্থ টেক্সাসের জেনারেল সেক্রেটারি জানান, একটি পরিবারকে হারানোর এই শোক কখনোই দূর হবে না। এটি একটি শিক্ষা দিয়ে গেল সকলকে। আমরা যেন সন্তানের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকি। ওদের কোন সমস্যা দেখলেই যেন তা দূর করতে সচেষ্ট থাকি। পরিবারের মধ্যে ভালোবাসা-সম্প্রীতির বন্ধন জোরালো করতে হবে সকলকেই। এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারিদের প্রায় সকলেই ছিলেন দু’ভাইয়ের সহপাঠী এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিবেশী। সকলেই গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছেন প্রিয়-পরিচিতজনদের হারিয়ে।
উল্লেখ্য, মানসিকভাবে অসুস্থ তানভির তৌহিদ (২১) এবং তার ছোট ভাই ফারহান তৌহিদ (১৯) গত শুক্রবার দিবাগত রাতে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে তাদের বাবা তৌহিদুল ইসলাম (৫৪), মা আইরিন ইসলাম (৫৬), একমাত্র বোন পারভিন তৌহিদ (১৯) এবং নানী আলফাতুন্নেসা (৭৭)কে গুলি করে হত্যা করে।
আগামী ১০ এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যায় নিহতদের বাড়ির সামনে আরেকটি শোক-সমাবেশ হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা