যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ইউনিভার্সিটি ‘আই গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি’র (আইজিইউ) ‘মাস্টার অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন’(এমবিএ) সহ বিএসআইটি, এমএস সিএস, এমএসআইটি কোর্সে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার। নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে নবাগতদের আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভার্জিনিয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবের উজ্জ্বল ইতিহাস শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন। তারা বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অসংখ্য শিক্ষার্থীর মধ্যে এখানে যারা ভর্তির সুযোগ পেয়েছে তারা নিঃসন্দেহে মেধাবী। প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কে বার্ক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ নবাগত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকবৃন্দ অনেক অভিজ্ঞ। আপনাদের যে কোন সমস্যা তাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। তাদের অভিজ্ঞতা আপনাদের অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এ সময় শিক্ষার্থীদেরকে স্কিল ডেভেলপমেন্টের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রতি বছর ৮৫ হাজার দক্ষ কর্মী বিদেশ থেকে নিয়ে আসে। অথচ ইউএসএতে পড়ালেখা শেষ করে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে ফিরে যেতে হয় তাদের নিজ দেশে। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে প্রযুক্তিগত শিক্ষা সংমিশ্রণের অভাবকে। চ্যান্সেলর আরো বলেন, এখানে আসা স্টুডেন্টদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে প্রযুক্তিগত শিক্ষার সংমিশনের মাধ্যমে ইউএসএ'র জব মার্কেটের জন্য যোগ্য করে গড়ে তোলাই আই গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ইউনিভার্সিটি প্রযুক্তিগত শিক্ষায় দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ করেছে এবং আশা করছে তাদের এই চেস্টার ব্যাপক সফলতা তারা পাবেন।
চ্যান্সেলর হানিপ উল্লেখ করেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় সকল শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক ও কারিগরি শিক্ষা দিয়ে আসছে। যা যুক্তরাষ্ট্রে আর কোন বিশ্ববিদ্যালয় এখনো চালু করেনি। এটাই আমাদের বিশেষত: এবং ইতিমধ্যেই সে স্বীকৃতি আমরা পেয়েছি নিরপেক্ষ একটি সংস্থা পরিচালিত জরিপে। এই ইউনিভার্সিটির এমবিএ প্রোগ্রামটি টানা দ্বিতীয় বছরের জন্য ‘ইন্টেলিজেন্ট ডট কম’ দ্বারা দেশব্যাপী প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য নাম্বার ওয়ান স্কুল হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে। ‘ইন্টেলিজেন্ট ডটকম’ উচ্চশিক্ষা পরিকল্পনার একটি সংস্থা, শীর্ষ বিবিএ এবং এমবিএ প্রোগ্রামগুলি নির্ধারণের জন্য দেশের ১৭৭টি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মূল্যায়ন করেছে। প্রতিটি প্রোগ্রাম পাঠক্রমের গুণগতমান, স্নাতকের হার, খ্যাতি এবং স্নাতকোত্তর কর্মসংস্থানের উপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়টির সিএফও ফারহানা হানিপ নতুন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আই গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা এ দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অনেক কম খরচে ও সুন্দর মনোরম পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে। ফারহানা আরও বলেন, ‘পিপলএনটেক’ আই গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। সেখানে আমি ১৬ বছর কাজ করেছি। সেহেতু স্কিল ডেভেলপমেন্টের অভিজ্ঞতাকেও আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারবো।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট (অপারেশন এ্যান্ড রেজিস্টার) ড. শান চো, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডিস্ট্যান্ট এডুকেশন) ড. জেফরী জি পিরিম, আইটি স্কুলের পরিচালক এ্যাপোস্টোলস ইলিওপোলাস, পরিচালক (স্কুল অব বিজনেস) ড. মার্ক এল রবিনসন, বাংলাদেশের ফাইবার এ্যাট হোম লিমিটেডের সিইও এবং ভার্জিনিয়াস্থ ক্রিকেট পয়েন্টের সিইও কাজী জামান, ওয়েস্টার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটির এলামনাই এবং বিজনেস এনালিস্ট মো. আবুবকর সিদ্দিক, মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড.সালমান এলবেদুরসহ বিভিন্ন কোর্সের শিক্ষকবৃন্দ।
এর আগে তথ্য-প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে ‘মাস্টার অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন’ (এমবিএ) কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে আই-গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি। উল্লেখ্য, ১২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই ইউনিভার্সিটির পুরো মালিকানা নিয়েছেন আবুবকর হানিপ। এবং মার্কিন মুল্লুকে বাংলাদেশি আমেরিকানের মালিকানাধীন এটিই হচ্ছে এখন পর্যন্ত একমাত্র পূর্ণাঙ্গ একটি ইউনিভার্সিটি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন