উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় শোলাকিয়া ঈদগাহে। প্রতি বছর এখানে ঈদের নামাজ আদায় করতে মুসলিম বিশ্বের লাখো মানুষ একত্রিত হয়ে থাকেন। সারা বিশ্বের শান্তি, সমৃদ্ধি, সম্প্রীতি ও আল্লাহর রহমতের আশায় এখানে লাখো মুসলমান আল্লাহর দরবারের তাদের মিনতি তুলে ধরেন। নামাজের পর মুসল্লিরা তাদের অতীতের ভুল-ভ্রান্তির ক্ষমার জন্য আল্লাহর দরবারে হাত তুলে মোনাজাত করেন। লাখো মানুষের সমন্বিত মোনাজাতে পুরো শহরে তখন এক পবিত্র পরিবেশের সৃষ্টি হয়। গোটা শহরে তখন লাখো কণ্ঠে উচ্চারিত হয় মহান আল্লাহর নাম। যুগ যুগ ধরে লাখো মানুষের সমাগমে এভাবে পালিত হয়ে আসছে শোলাকিয়া ঈদগাহের সর্ববৃহৎ জামাত। ঈদের জামাতকে ঘিরে এতমানুষের সমাগমের রেকর্ড উপমহাদেশের মধ্যে কেবল শোলাকিয়ারই রয়েছে। মুসলিম সংস্কৃতির অন্যতম এই ঈদগাহটি কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত। প্রতিবছর এ ময়দানে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে শোলাকিয়া ঈদগাহ ঐতিহাসিক স্থানে পরিণত হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত এখানেই অনুষ্ঠিত হয়। এ ময়দানের বিশাল জামাত কিশোরগঞ্জকে গৌরবান্বিত ও ঐতিহ্যবাহী করেছে। বর্তমানে এখানে একসঙ্গে তিন লক্ষাধিক মুসল্লি ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শুরুর ১৫ মিনিট আগে রেওয়াজ অনুযায়ী পর পর তিনবার শটগানের গুলি ছুড়ে মুসল্লিদের দাঁড়ানোর সংকেত দেওয়া হয়। এই ঈদগাহ নিয়ে বেশকিছু ইতিহাস প্রচলিত রয়েছে। কথিত আছে, ইসলামের ঐশী বাণী প্রচারের জন্য সুদূর ইয়েমেন থেকে আগত শোলাকিয়া ‘সাহেব বাড়ির’ পূর্বপুরুষ সুফি সৈয়দ আহমেদ তার নিজস্ব তালুকে ১৮২৮ সালে নরসুন্দা নদীর তীরে ঈদের জামাতের আয়োজন করেন। ওই জামাতে ইমামতি করেন সুফি সৈয়দ আহমেদ নিজেই। অনেকের মতে, মোনাজাতে তিনি মুসল্লিদের প্রাচুর্য প্রকাশে ‘সোয়া লাখ’ কথাটি ব্যবহার করেন। সেখান থেকেই এই নামকরণ। আবার অনেকের মতে, সেদিনের ওই জামাতে ১ লাখ ২৫ হাজার (সোয়া লাখ) লোক জমায়েত হয়েছিল। ফলে সোয়া লাখ থেকে শোলাকিয়া নামটি চালু হয়ে যায়। আবার জনশ্রুতি আছে, মোগল আমলে এখানে অবস্থিত পরগনার রাজস্বের পরিমাণ ছিল সোয়া লাখ টাকা। উচ্চারণের বিবর্তনে সোয়া লাখ থেকে সোয়ালাখিয়া— সেখান থেকে শোলাকিয়া। পরবর্তী সময়ে ১৯৫০ সালে স্থানীয় দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ এই ময়দানকে অতিরিক্ত ৪ দশমিক ৩৫ একর জমি দান করেন। বর্তমান শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের আয়তন ৭ একর। এই ঈদগাহ মাঠটি চারপাশে উঁচু দেয়ালে ঘেরা হলেও মাঝে মাঝেই ফাঁকা রাখা হয়েছে যাতে মানুষ মাঠে ঢুকতে ও বের হতে পারে। এ ছাড়া এই মাঠের প্রাচীর দেয়ালে কোনো দরজা নেই। শোলাকিয়া মাঠে ২৬৫ সারির প্রতিটিতে ৫০০ করে মুসল্লি দাঁড়াবার ব্যবস্থা আছে। ফলে মাঠের ভেতর সব মিলিয়ে এক লাখ বত্রিশ হাজার ৫০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। এই মাঠটিতে ঈদুল ফিতরের সময় সবচেয়ে বেশি লোকের সমাগম হয়ে থাকে। ঈদুল ফিতরের সময় দেখা যায়— আশপাশের সড়ক, খোলা জায়গা, নদীর তীর, এমনকি বাড়ির আঙিনায়ও মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। এভাবে প্রতি বছরই এখানে প্রায় তিন লাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ পড়ে থাকেন। মুসল্লির এই সংখ্যা প্রতিবছর বেড়েই চলেছে। সর্ববৃহৎ এই ঈদগাহের ব্যবস্থাপনার কার্যনির্বাহী কমিটি রয়েছে। ঈদের নামাজের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড এই কমিটি করে থাকে। গত কয়েক বছর ধরে গণমাধ্যমে প্রচারের ফলে দেশ-বিদেশে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের পরিচিতি আরও বেড়েছে। ফলে ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, ইরানসহ বিভিন্ন দেশের মুসল্লির সংখ্যা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।
শিরোনাম
- শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট আসক্তি ও বই পড়ার আগ্রহ বিষয়ে ফকিরহাটে শুভসংঘের আলোচনা সভা
- স্ন্যাপচ্যাটে নতুন দুই ফিচার চালু
- সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির চেষ্টা
- যশোরে কোটি টাকার স্বর্ণের বারসহ যুবক আটক
- বাজারে এলো সাশ্রয়ী মূল্যের ‘আকিজ ড্রিংকিং ওয়াটার’
- ৫ দিনের রিমান্ডে স্বাস্থ্যের ঠিকাদার মিঠু
- লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন আরও ১৭৬ বাংলাদেশি
- উখিয়ায় বন্যহাতির রহস্যজনক মৃত্যু
- যুক্তরাষ্ট্রে দ্বীপে চীনের ‘গুয়াম কিলার’ আতঙ্ক
- বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নতুন বাহিনী ‘এয়ার গার্ড’
- মোংলায় ইয়াবাসহ নারী মাদক ব্যবসায়ী আটক
- হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচারে বদলাবে গ্রুপ চ্যাটের ধরণ
- বাংলাদেশি সমর্থকরা শ্রীলঙ্কার জয়ের অপেক্ষায় রয়েছে : শানাকা
- গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা, নিহত ছাড়াল ৬৫ হাজার
- বয়স্কদের সুষম খাদ্য
- কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার জেরে আত্মহত্যা, ৯০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ
- কঙ্গোতে ইবোলার নতুন প্রাদুর্ভাব, আতঙ্কে সাধারণ মানুষ
- পুঁজিবাজার: সূচকের ওঠানামায় চলছে লেনদেন
- ট্র্যাপিস্ট-ওয়ানই গ্রহ নিয়ে নতুন আশা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের
- ২০ কোটি বছরের পুরনো কোয়েলাক্যন্থ জীবাশ্ম শনাক্ত