দক্ষিণ জাপানের আকাশে হঠাৎ করে দেখা গেল এক বিশাল আগুনের গোলা। রাত ১১টা ৮ মিনিটে (১৯ আগস্ট স্থানীয় সময়) উল্কার মতো আগুনের এই গোলা আকাশ চিরে ছুটে যায়। এর আলো এতটাই উজ্জ্বল ছিল যে, মুহূর্তের জন্য রাত দিনের মতো মনে হচ্ছিল। পরে এটি ভেঙে প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুনের গোলাটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে নেমে আসে। এর শক্তিশালী তরঙ্গ (শকওয়েভ) মাটিতেও অনুভূত হয়। নিরাপত্তা ক্যামেরা ও গাড়ির ড্যাশক্যাম ভিডিওতে ধরা পড়ে, আগুনের গোলা প্রথমে সবুজ-নীল আলো ছড়ায়। এত আলোতে কিছু ক্যামেরা অন্ধকার হয়ে যায়। শেষে এটি কমলা-লাল আলো ছড়িয়ে দিগন্তে গিয়ে ভেঙে যায়।
নাসার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আগুনের গোলা আসলে মহাশূন্যের কোনো পাথর বা ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে জ্বলে ওঠার ফল। ছোট উল্কাকে আমরা সাধারণত ‘ঝলমলে তারা’ বা ‘শুটিং স্টার’ বলি। কিন্তু যখন এটি আকারে বড় হয় এবং গ্রহ-তারার চেয়েও উজ্জ্বল দেখা যায়, তখন তাকে বলা হয় ফায়ারবল বা আগুনের গোলা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বলন্ত এই বস্তু হয়তো কোনো ছোট গ্রহাণুর টুকরো অথবা মহাশূন্যের ধুলিকণা ছিল। নাসা জানায়, এরকম বস্তু এক মিটার বা তারও বেশি আকারের হতে পারে।
আগুনের গোলাটি পারসেইড উল্কাবৃষ্টির সময় পড়ে। তবে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত নন এটি সেই উল্কাবৃষ্টির অংশ ছিল, নাকি আলাদা কোনো এলোমেলো উল্কাপিণ্ড (sporadic meteoroid)।
জাপানের পশ্চিমাঞ্চল—কাগোশিমা, কুমামোতো থেকে শুরু করে ২০০ কিলোমিটার দূরের ওসাকা পর্যন্ত—অনেক মানুষ এটি প্রত্যক্ষ করেন। মিয়াজাকি প্রিফেকচারের বাসিন্দা ইয়োশিহিকো হামাহাতা বলেন,একটি সাদা আলো হঠাৎ ওপর থেকে নেমে এলো। এত উজ্জ্বল ছিল যে চারপাশের ঘরবাড়ির আকার পর্যন্ত স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল।
এই বিরল ঘটনাটি সাধারণ মানুষকে যেমন বিস্মিত করেছে, তেমনি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছেও এটি গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল