রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বড়দিনের আগে বার্সার বড় জয়

ঘরের মাঠে বিধ্বস্ত রিয়াল

ক্রীড়া ডেস্ক

বড়দিনের আগে বার্সার বড় জয়

বার্সাকে এগিয়ে দিলেন সুয়ারেজ। তাকে ঘিরে উল্লাসে মেতে উঠলেন মেসি- ইনিয়েস্তারা —এএফপি

সান্তিয়াগো বার্নাব্যূর সবুজ চত্বরে নামার জন্য প্রস্তুত দুই দল। লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস এগিয়ে গেলেন বার্সেলোনার স্প্যানিশ বন্ধুদের দিকে। হাত ও কাঁধ মেলালেন ইনিয়েস্তা, পিকে, বাসকুয়েটসদের সঙ্গে। ম্যাচের আগের এই বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থা অবশ্য কিছুক্ষণ পরেই আর থাকল না। এল ক্ল্যাসিকোর উত্তেজনার মধ্যে তখন তারা পরস্পরের ঘোরতর শত্রু। এমনকি পরস্পরকে প্রয়োজনে ফাউল করতেও ছাড়লেন না তারা। গতকাল সান্তিয়াগো বার্নাব্যূতে চরম উত্তেজনাপূর্ণ এল ক্ল্যাসিকোর লড়াই শেষ হয়েছে ৩-০ ব্যবধানে। এই জয়ে চির প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ১৪ পয়েন্টে এগিয়ে গেল বার্সেলোনা। ১৭ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে শীর্ষস্থানে আরও মজবুত আসন গাড়ল কাতালানরা। ১৬ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরেই থাকল রিয়াল মাদ্রিদ। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুই নম্বরে।

এশিয়ান দর্শকদের সুবিধার জন্য মধ্য দুপুরে অনুষ্ঠিত এল ক্ল্যাসিকোর লড়াইটা শুরু হলো পূর্ণ উত্তাপ নিয়ে। মুহূর্মুহূ আক্রমণ আর সমর্থকদের গলা ফাটানো চিৎকারে এল ক্ল্যাসিকোতে উত্তেজনার পারদ চড়ছিল দ্রুত গতিতে। সেই সঙ্গে বাড়ছিল আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের ধারাও। প্রথমদিকে রিয়াল মাদ্রিদের ধারাল আক্রমণগুলো রুখতে বেশ কষ্টই করতে হচ্ছিল পিকে-রবার্তোদের। তাদের সঙ্গে ডিফেন্স লাইনে এমনকি যোগ দিচ্ছিলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তারাও। রোনালদো আর বেনজেমাদের বেশ কয়েকটা দুর্দান্ত আক্রমণ ব্যর্থ করে দেন তারা। প্রথমার্ধে রিয়াল মাদ্রিদের পাল্লা ভারি থাকলেও মেসি-সুয়ারেজ-পলিনহোরা বেশ কয়েকবার রিয়ালের ডিফেন্স লাইন তছনছ করে দেন। অবশ্য গোলরক্ষক নাভাস দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন প্রতিটা আক্রমণ। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে সান্তিয়াগো বার্নাব্যূর দর্শকরা ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে লিওনেল মেসিকে ফ্রি কিক শট নিতে দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিল। তবে কোন বিপদ ঘটেনি। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোল শূন্য ব্যবধান নিয়েই।

দ্বিতীয়ার্ধেই বদলে যায় বার্সেলোনা। যেন নতুন কোন মন্ত্র জঁপে খেলতে নামেন মেসিরা। রিয়াল মাদ্রিদকে আক্রমণের সুযোগ খুব কমই দেন পিকে-আলবারা। ম্যাচের ৫৪তম মিনিটে সার্জিও রবার্তোর কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ এক গোলে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ। এরপরও বার্সেলোনাই আক্রমণে নেতৃত্ব দিতে থাকে। মাঝে মধ্যে রোনালদোদের ব্যর্থ আক্রমণ রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তদের আফসোসই কেবল বাড়িয়ে তোলে। ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে গোল লাইনে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে বল রুখে লাল কার্ড দেখেন। ৬৪তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন লিওনেল মেসি। এরপরই বার্সেলোনার জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। দশ জনের দল নিয়ে কাতালানদের সঙ্গে আর সমানতালে লড়াই করতে পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। অবশ্য রোনালদো, সার্জিও রামোস আর গেরেথ বেলেরা দারুণ কিছু সুযোগ মিস না করলে ম্যাচের ফলাফল ভিন্নও হতে পারতো। গোল মিস করেছেন লিওনেল মেসি আর পলিনহোরাও। ম্যাচের অতিরিক্ত মিনিটে মেসির এসিস্টে জোরাল শটে আরও একটি গোল করে বার্সেলোনার ৩-০ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত করেন অ্যালেক্স ভিডাল।

বড়দিনের ছুটির আগে দারুণ একটা জয় চেয়েছিলেন লিওনেল মেসি। কাঙ্খিত সেই জয়টা পেয়ে গেলেন তিনি। লা লিগায় চলতি মৌসুমে ১৫তম গোল করলেন এ আর্জেন্টাইন। এল ক্ল্যাসিকোতে মোট গোল সংখ্যা হলো ২৫টি। অবশ্য আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়নস কাপে আরও একটি গোল করেছেন তিনি। এল ক্ল্যাসিকোতে রোনালদোর গোল সংখ্যা ১৭টি।

সর্বশেষ খবর