শুক্রবার, ১০ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

শান্তর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে টাইগারদের স্বস্তি

৫০তম টি-২০ জয়

আসিফ ইকবাল

শান্তর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে টাইগারদের স্বস্তি

জিততে রান তাড়া করতে হবে ওভার প্রতি ৭.৮১। টি-২০ ক্রিকেটে যা আকাশছোঁয়া নয়। তারপরও প্রতিপক্ষ যখন বর্তমান টি-২০ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, তখন অনেক বেশি হিসেবি ক্রিকেট খেলার পরিকল্পনা থাকতে হবে। সেই পরিকল্পনায় বাজিমাত করেছেন নাজমুল শান্ত, সাকিব আল হাসান, হাসান মাহমুদরা। জশ বাটলারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে দাপুটে ক্রিকেট খেলে ১২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের স্বপ্নের এক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। যা বাংলাদেশের ১৪৫ নম্বর টি-২০ ম্যাচে ৫০তম জয়। আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি জয় পাকিস্তানের, ২১৫ ম্যাচে ১৩১ জয়। সাকিব বাহিনী যে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে, তাতে ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন নাজমুল শান্ত। ১৮ টি-২০ ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। ৫১ রানের ইনিংসটি খেলেছেন মাত্র ৩০ বলে। ১৭০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটিতে ছিল ৮টি বাউন্ডারি। যাতে টানা ৪টি বাউন্ডারি মেরেছেন মার্ক উডের ওভারে। ক্যারিয়ারে এটা তার টানা দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি। গত নভেম্বরে টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন অ্যাডিলেডে। ওভার প্রতি পৌনে ৯ রানের টার্গেটে ইংলিশ বোলারদের তুলোধুনো করা নাজমুল শান্ত ম্যাচ শেষে দলের প্রশংসা করেন, ‘তৌহিদ দারুণ ব্যাটিং করেছেন। আমি বল দেখে দেখে খেলার চেষ্টা করেছি। তবে ২ উইকেট হারানোর পরও আমি ভয় পাইনি। বোলিংয়ে হাসান মাহমুদ ও তাসকিন ছিলেন দুর্দান্ত। রনি তালুকদার ও লিটন দাস টি-২০ ক্রিকেটের ভিতটা ভালোই দিয়েছেন।’      

বহুদিন পর পুরোপুরি টি-২০ ফরম্যাটের ক্রিকেট খেলেছে টাইগার ক্রিকেটাররা। চাপের মুখে থেকেও ডেথ ওভারের দারুণ বোলিং করেছেন তরুণ ফাস্ট বোলার হাসান। রান তাড়া করতে নেমে বলের চেয়ে দ্রুতগতিতে রান করেছেন রনি, নাজমুল, সাকিব, লিটন, আফিফ হোসেনরা। ১৫৭ রানের টার্গেটে দুই ওপেনার রনি ও লিটন ৩.৩ ওভারে ভিত দেন ৩৩ রানের। প্রায় ৮ বছর পর খেলতে নামা রনি ২১ রানের ছোট্ট ইনিংসটি খেলেন মাত্র ১৪ বলে ৪ চারে। তার ১৫০ স্ট্রাইক রেটের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং সতীর্থদের আত্মবিশ্বাসের রসদ জুগিয়েছে। তার দেখানো পথে অপরাপর টাইগার ব্যাটাররা হেঁটেছেন। ওয়ানডে সিরিজে পুরোপুরি ব্যর্থ লিটন গতকাল ১২০ স্ট্রাইক রেটে রান করেন ১২। তবে দুর্দান্ত ছিলেন নাজমুল শান্ত। শুরু থেকেই তিনি সফরকারী বোলার স্যাম কুরান, ক্রিস ওয়ক্স, জোফরা আর্চার, আদিল রশিদ, মঈন খানদের উপর চড়াও হয়ে ব্যাটিং করতে থাকেন। তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ৫৪ রান করে ২ উইকেট হারিয়ে। ১০ ওভারে তুলে নেয় ৯৮ রান। ফলে শেষ ১০ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৫৯ রান। শেষ দিকে টাইগার অধিনায়ক সাকিবের ২৪ বলে ৩৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে সহজ হয় জয়। শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জিতেছিল সাকিবের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে। গতকাল তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি জয়ের পর টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা গোটা ম্যাচে অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছি। ম্যাচের প্রথম ১০ ওভারে ওরা দারুণ খেলেছে। চাপে থাকলেও আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম না। ম্যাচে আমি ছাড়া সবাই ভালো ফিল্ডিং করেছেন। আমাদের টার্গেট ছিল ভালো খেলা। আমি মনে করি, ২০২৪ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের জন্য এটা দারুণ একটা শুরু। আমার বিশ্বাস ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-২০ বিশ্বকাপের আগে আমরা একটি ভালো দল হয়ে উঠব।’

সিরিজের পরের দুটি টি-২০ মিরপুরে যথাক্রমে ১২ ও ১৪ মার্চ।

সর্বশেষ খবর