ফিনিশিং টেপ স্পর্শ করার পর একবার পেছনে ফিরে তাকান গ্যাব্রিয়েল লিসা টমাস। তাকিয়ে দেখেন সবার আগে দৌড় শেষ করেছেন। তখন বিশ্বাস হচ্ছিল না গ্যাব্রিয়েল থমাস বা গ্যাবি থমাসের। ২০০ মিটার স্প্রিন্টে ‘আন্ডার ডগ’ গ্যাব্রিয়েল সোনা জেতার পর অবিশ্বাসে চোখ বড় করে ফেলেন। এরপর আনন্দ, উচ্ছ্বাসে পুরো স্টেডিয়াম দৌড়াতে শুরু করেন। দৌড়ানোর মাঝে গ্যালারি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি পতাকা নিয়ে পুরো স্টেডিয়াম দৌড়াতে থাকেন তিনি। গ্যাব্রিয়েল এর আগে আরও দুবার পোডিয়ামে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীতের সঙ্গে ঠোঁট মেলাতে পারেননি। এই আফসোস বয়ে বেড়িয়েছেন টোকিও অলিম্পিক থেকে। এবার সেই আফসোস দূর হয়েছে তার। প্যারিস অলিম্পিকে ২০০ মিটারে সোনা জিতে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছেন। সোনা জিততে সময় গ্যাবি সময় নিয়েছেন ২১.৮৩ সেকেন্ড। ২০০ মিটার স্প্রিন্টে অলিম্পিক ও বিশ্ব রেকর্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তির স্প্রিন্টার ফ্লোরেন্স গ্রিফিথ জয়নারের। সোনা জিততে গ্যাব্রিয়েল পেছনে ফেলেন প্যারিস অলিম্পিকের দ্রুততম মানবী সেন্ট জুলিয়ান আলফ্রেড ও আরেক মার্কিন স্প্রিন্টার ব্রিটানি ব্রাউনকে। ১০০ মিটারে সোনা জয়ের পর ২০০ মিটারে রুপা জিততে সেন্ট লুসিয়ার জুলিয়ান সময় নেন ২২.০৮ সেকেন্ড। ফটোফিনিশে ব্রোঞ্জ জিতেছেন ব্রিটানি ২২.২০ সেকেন্ডে। ২৭ বছর বয়সি গ্যাব্রিয়েল ট্রোকিও অলিম্পিকে ২০০ মিটারে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। রুপা জিতেছিলেন ১০০ মিটার স্প্রিন্টে। মার্কিন দলে সব সময়ই রয়েছেন গ্যাব্রিয়েল। কিন্তু ছায়া হয়েছিলেন শাকারি রিচার্ডসনের। শাকারি ১০০ মিটারে রুপা জিতেন জুলিয়ানের পেছনে থেকে। গ্যাব্রিয়েল দৌড়ালেও পদক জিতেননি।২০০ মিটারে সোনা জয়ের পর আনন্দে আত্মহারা গ্যাব্রিয়েল বলেন, ‘আমি আসলেই বিশ্বাস করতে পারছি না।কেননা, অলিম্পিকে সোনার পদক জয় আমার স্বপ্নে দেখার মতো কিছু। একই সঙ্গে জানি এটার জন্য কতটা লড়াই আমি করেছি।’ গ্যাব্রিয়েলের সামনে আরও একটি হাতছানি রয়েছে সোনা জয়ের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফেবারিট চার গুণিতক ১০০ মিটার রিলেতে। রিলেতে দৌড়াবেন শাকারি রিচার্ডসন। সোনা জয়ের উৎসব করার পর তিনি বলেন, ‘ছয় বছরের প্রচেষ্টার ফল। শান্তভাবে কঠোর পরিশ্রম করা, কঠিন প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশ নিতে নিজেকে তৈরি করেই আজকের অবস্থানে এসেছি। আমি কষ্ট করেছি বলেই টার্গেট স্পর্শ করেছি। আমার জীবনের সবচেয়ে সুখময় মুহূর্ত এটি।’
পুরুষদের ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে জিতেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কুইন্সি হল। অথচ ৩৫০ মিটার পর্যন্ত তিনি বেশ পিছিয়েছিলেন। এরপর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা দৌড়টি দিয়ে জিতে নেন সোনা। সময় নিয়েছেন ৪৩.৪০ সেকেন্ড। যা ৪০০ মিটার স্প্রিন্টের পঞ্চম দ্রুততম এবং এটা তার ক্যারিয়ার সেরা সময়।
৪৩.৪৪ সেকেন্ডে রুপা জিতেছেন গ্রেট ব্রিটেনের ম্যাথু হাডসন-স্মিথ। স্মিথের সময়টি আবার ইউরোপিয়ান রেকর্ড। ব্রোঞ্জ জিতেছেন জাম্বিয়ার মুজলা সামুকোঙ্গা ৪৩.৭৪ সেকেন্ড সময়ে।