ঘরোয়া ফুটবল শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ক্লাবগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই পেশাদার লিগ কমিটি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে নতুন মৌসুম মাঠে নামানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল। ৪ অক্টোবর চ্যালেঞ্জ কাপ, ৮ অক্টোবর ফেডারেশন কাপ এবং ১১ অক্টোবর থেকে পেশাদার লিগ শুরুর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত ছিল। আগামীকাল বাফুফে সহ-সভাপতি ও লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ইমরুল হাসানের সঙ্গে ক্লাব প্রতিনিধিরা বৈঠক করে শিডিউল চূড়ান্ত করার কথা। কিন্তু তার আগেই ক্লাবগুলো বেঁকে বসেছে। হঠাৎ সুর বদল করে কিছু ক্লাব বাফুফেকে চিঠি দিয়েছে এত দ্রুত তাদের পক্ষে মাঠে নামা সম্ভব নয়। দেশের পরিস্থিতির কারণে প্রস্তুতিই নিতে পারেনি। তারা ছয় সপ্তাহ অর্থাৎ দেড় মাস প্রস্তুতির জন্য সময় চেয়েছে।
ক্লাবগুলোর হঠাৎ এমন আবদারের পরিপ্রেক্ষিতে ঘরোয়া মৌসুম নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে সব ক্লাবই কি প্রস্তুতির সময় চেয়েছে? মোহামেডানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্স বলেন, ‘নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ক্লাবগুলো অর্থ খরচ করে দল গড়েছে। এখন প্রস্তুতি ছাড়া মাঠে নামলে তো খেলোয়াড়রা ঠিকমতো পারফরম্যান্স প্রদর্শন করতে পারবে না। জেনে শুনে আমরা দলের ক্ষতি করতে পারি না। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সর্বত্র অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় ক্লাবগুলো প্রশিক্ষণই শুরু করতে পারেনি। তাই ছয় সপ্তাহ প্রস্তুতির সময় চেয়েছি। এরপর গুছিয়ে দলগুলো মাঠে নামতে পারবে।’ প্রিন্স বলেন, ‘আমার জানা মতে মোহামেডান ছাড়া আরও ছয়টি ক্লাব প্রস্তুতির সময় চেয়েছে। তা ছাড়া বিদেশি খেলোয়াড়রাও এখন পরিস্থিতি দেখে বাংলাদেশে আসবেন বলে জানিয়েছেন। এ অবস্থায় কোনোভাবেই অক্টোবরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মাঠে নামা সম্ভব নয়’।
পেশাদার লিগের ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী এবার বিদেশি ফুটবলার ছাড়া খেলবে। তাই তাদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তা ছাড়া তারা প্রস্তুতির জন্য সময় চেয়েছে কি না তা জানতে ফুটবল ম্যানেজার নজরুলের মুঠোফোনে বেশ কবার কল করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ফুটবলে প্রস্তুতিটা বড় ফ্যাক্টর। বিষয়টি বাফুফে বা লিগ কমিটি অবশ্যই গুরুত্ব দেবে। তবে ফুটবল দ্রুত মাঠে গড়াক তা আমরা চাই।’ প্রস্তুতির সময় চাওয়া মানে নতুন মৌসুম পিছিয়ে যাওয়া। দেড় সপ্তাহ মানে অক্টোবর শেষ বা নভেম্বরের প্রথম দিকে ফুটবল মাঠে নামা। তাও আবার নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে বাফুফের নির্বাচন, বসুন্ধরা কিংসের এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে অংশগ্রহণ ছাড়াও দেশের পরিস্থিতি কেমন থাকে সেটাও দেখার বিষয়। এ অবস্থায় নতুন মৌসুম ঘিরে জটিলতা দেখা দিতে পারে। উল্লেখ্য, এবার স্বাধীনতা কাপ হচ্ছে না। সুপারকাপ নামানোর পরিকল্পনাও বাদ দেওয়া হয়েছে। বাফুফের সহ-সভাপতি ইমরুল হাসানও স্বীকার করেছেন ক্লাবগুলো ছয় সপ্তাহ প্রস্তুতির জন্য চিঠি দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘ক্লাব নিয়েই তো ঘরোয়া আসর। এখন অধিকাংশ ক্লাব বৈঠকে কী বলে তা দেখতে হবে। গত মাসেও ক্লাবগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে। সেখানে সবার সম্মতি নিয়েই খসড়া শিডিউল ঠিক হয়েছিল। এখন তারা যখন অনুশীলনের বিষয়টি বলছেন তাও গুরুত্ব দিতে হবে। কী হবে শনিবার বৈঠক শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।’