টি-২০ সিরিজে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। নিজেদের প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছেন মিরাজরা। দুই সিরিজে মুদ্রার দুই পিঠের পারফরম্যান্স। টি-২০ ফরম্যাটে দুরন্ত পারফরম্যান্স করলেও ওয়ানডে সিরিজে অসহায় আত্মসমর্পণ। মেহেদি হাসান মিরাজ অধিনায়ক হওয়ার পর জয় ভুলেই গেছে টাইগাররা। গত নভেম্বরে শারজাহতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অধিনায়ক মিরাজের অভিষেক। নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অনুপস্থিতিতে গেল ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে নেতৃত্ব দিয়েও হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলেন মিরাজ। ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পুনরায় টাইগারদের নেতৃত্বে ফেরেন নাজমুল। আসরে দলের ভরাডুবির পর তার কাছ থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নেয় বিসিবি। ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম টাইগারদের নেতৃত্ব নাজমুল থেকে হস্তান্তর করেন মিরাজের হাতে। দায়িত্ব পাওয়ার পর মিরাজ এখন পর্যন্ত চারটি সিরিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনটি সিরিজের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছেন। শ্রীলঙ্কার কাছেও সিরিজ হেরেছেন। অবশ্য একটি ম্যাচ জিতে ব্যবধান কমান। সব মিলিয়ে মিরাজের অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ ১০ ম্যাচে জয় পেয়েছে একটি এবং হার ৯টি। মঙ্গলবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছে ২০০ রানের পর্বতসমান ব্যবধানে। রানের বিবেচনায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে এটাই সর্বোচ্চ ব্যবধানে হার। ২০২৩ সালে চট্টগ্রামে হেরেছিল ১৪২ রানে। তিনটি করে টি-২০ ও ওয়ানডে খেলতে ঢাকায় আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টাইগাররা এখন প্রস্তুতি নেবে ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে।
টানা হারের ব্যর্থতায় মিরাজের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মঙ্গলবার আফগানিস্তানকে ২৯৩ রানে আটকে রেখে মিরাজ বাহিনী অলআউট হয় ২৭.১ ওভারে মাত্র ৯৩ রানে। বাংলাদেশ সর্বশেষ শ’য়ের নিচে ৮২ রানে অলআউট হয়েছিল ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। শ’য়ের নিচে অলআউট হয়ে হতাশা ঝরে পড়েছে অধিনায়ক মিরাজের কণ্ঠে। স্বীকার করেছেন, দল ৫০ ওভার ব্যাটিং করতে পারছে না, ‘ম্যাচে আমাদের পুরো ৫০ ওভার খেলতে হবে... আমরা সেটা পারছি না।’ বাংলাদেশ সর্বশেষ ১০ ওয়ানডে মাত্র দুবার অলআউট হয়নি। বাকি আটবার অলআউট হয়েছে। এতটাই বাজে ব্যাটিং করছে যে, ওপেনিং জুটিতে ছয় ব্যাটারকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন টিম ম্যানেজমেন্ট। পাঁচবার নতুন জুটি খেলিয়েও গত ১০ ম্যাচে পঞ্চাশোর্ধ্ব কোনো জুঁটি নেই। ওপেনিংয়ে সর্বশেষ পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি ছিল ১১ ম্যাচ আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। শারজাহতে ৫৩ রানের জুটি গড়েছিলেন তানজিদ তামিম ও সৌম্য সরকার। শুধু টপ অর্ডার কেন, মিডল অর্ডারও পুরোপুরি ব্যর্থ। সর্বশেষ ছয় ম্যাচে একটি মাত্র শতরানের জুটি গড়েছে মিডল অর্ডার। আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত সিরিজের প্রথম ম্যাচে তাওহিদ হৃদয় ও মিরাজ ১০১ রান করেছিলেন। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। সর্বশেষ ১৬ ম্যাচে সেঞ্চুরি সাকল্যে একটি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে হৃদয় ১০০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। হেরেই চলেছে বাংলাদেশ। এতটাই বাজে পারফরম্যান্স মিরাজ বাহিনীর, ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে টাইগারদের। যদিও বিশ্বকাপের আগে ২৪টি ওয়ানডে খেলবেন মিরাজরা। ২০২৭ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত র্যাংকিংয়ের শীর্ষ ৯ নম্বরে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। টানা হারে প্রশ্ন উঠেছে মিরাজের নেতৃত্ব নিয়ে। ১১১ ম্যাচের ক্যারিয়ারে মিরাজ হাফ সেঞ্চুরি করেছেন সাতটি। যার চারটিই অধিনায়কত্বের ১০ ম্যাচে।