শরীরে যেকোনো জায়গায় ব্যথা হতে পারে। এ জন্য আমরা চিকিৎসকের কাছে ছুটে যাই। কিন্তু সব ব্যথায় যে ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে এর কোনো মানে নেই। প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করলেই এ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কেননা ব্যথার জন্য বেশি ক্ষমতার ওষুধ খেলে নানা রকমের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। কেউ কেউ আবার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ফার্মেসি কর্মচারীদের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেয়ে থাকেন। যা কিনা আরও ভয়ঙ্কর। ভুল ওষুধ খেলে বড় ধরনের রোগতো বটে মৃত্যুর শঙ্কাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। মনে রাখতে হবে সাধারণ মানুষের ব্যথা ও ক্রীড়াবিদদের ব্যথা এক নয়। যে কোনো খেলায় খেলোয়াড়রা এমনিতেই টেনশনে থাকেন। বড় ম্যাচ হলেতো কথাই নেই, এ অবস্থায় ইনজুরি প্রবলেমে পড়লে তার যে কি অবস্থা হয় তিনি ছাড়া অন্য কেউ অনুভব করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হতে পারে তরুণ ফুটবলার শাহিন। ৯০ দশকে তিনি এক প্রীতিম্যাচ খেলতে গিয়ে পায়ে ব্যথা পেয়েছিলেন। এমন ইনজুরি হয়েই থাকে। শাহীনও ভেবেছিলেন কিছুদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারবেন। কিন্তু তা আর হয়নি, দেরি করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে না পারায় তার ইনজুরি পায়ে পচন ধরা শুরু করে। যা কিনা পরবর্তীতে তার পা কেটে ফেলতে হয়। ভারতীয় জাতীয় দলের ক্রিকেটার রমন লাম্বার কথা কি স্মরণ আছে। তিনি ঢাকা ক্রিকেট লিগে মোহামেডানের বিপক্ষে আবাহনীর পক্ষে ম্যাচ খেলতে গিয়ে ফিল্ডিংয়ের সময় আঘাত পান। গুরুতর আঘাত পাওয়ার পরও তিনি মাঠের বাইরে বসেছিলেন। বারবার তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল হাসপাতালে যেতে। বাইরে অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত ছিল। কিন্তু দেরিতে যাওয়ায় তার মাথার ব্যথা আরও বাড়তে থাকে। পরে হাসপাতালে গেলেও লাম্বা চলে যান না ফেরার দেশে। তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিলে হয়তোবা তার করুণ মৃত্যু ঘটত না। অনেকে বলেন, এখানে কিছু করার নেই। মৃত্যু যেদিন যার কপালে লেখা অছে তাকে আটকানো যাবে না। হ্যাঁ, মানুষের জন্ম চিরস্থায়ী নয়। সবাইকে একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। সাধারণ মানুষের ব্যথা হলে অনেক সময় ব্যায়ামেই মুক্তি পাওয়া যায়। বড় বড় ইনজুরিতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেই চলে। কিন্তু ক্রীড়াবিদরা এত সাহসী যে খেলা বা অনুশীলনের সময় ইনজুরি হলে খুব একটা গুরুত্ব দেন না। শরীর ঠিক রাখতে নিজ থেকে ওষুধ খেয়ে বা ব্যায়াম করতে চান। আর এতেই হিতে বিপরীত হতে পারে। মনে রাখতে হবে শরীরের জন্য ব্যায়ামের দরকার আছে। কিন্তু ইনজুরি নিয়ে কোনো অবস্থায় ব্যায়াম করা ঠিক হবে না।