পাকিস্তান যে পুরোদস্তুর একটা 'আনপ্রেডিকটেবল' দল, গল টেস্টে তা দেখা গেল আরেকবার! যে টেস্টে 'অলৌকিক' কোনো ঘটনা ছাড়া শ্রীলঙ্কার জেতার আশা ছিল না, সে ম্যাচেই কি না তারা পাকিস্তানকে হারিয়েছে অনায়াসে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের উদাসীনতার কারণেই হারতে হয়েছে সফরকারীদের। প্রথম টেস্টের শেষ দিনে দলের ব্যাটিং দৈন্যতায় হতাশ এবং ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা। সাবেক অধিনায়ক হানিফ মুহাম্মদ বলেন, 'পিচে এমন বিপজ্জনক কিছু ছিল না, যে কারণে এমনভাবে ভেঙে পড়তে হবে। আমাদের ব্যাটসম্যানরা রক্ষণাত্দক খেলেতে চেয়েছে। কিন্তু পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে তাদের অবস্থা বুঝে খেলা উচিত ছিল। ম্যাচে জয়টা শ্রীলঙ্কানদের জন্য প্রাপ্য ছিল। ওরা দুর্দান্ত খেলেছে। তবে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের স্কোর বোর্ডের দিকে তাকানো উচিত ছিল। পরিস্থিতি বিবেচনা করে তো ব্যাটিং করতে হবে, তাই না? ক্রিকেটারদের মনে রাখতে হবে, এটা ক্লাব ক্রিকেট নয়, টেস্ট ক্রিকেট।' টিভি ধারাভাষ্যকার, সাবেক অধিনায়ক রমিজ রাজা ভাবতেই পারেননি পাকিস্তান ক্রিকেটাররা এতটা রক্ষণশীল মানসিকতার। তিনি বলেন, 'ক্রিকেটাররা নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে ব্যাটিং করেছে। আমি এত দিন ক্রিকেট খেলার সঙ্গে জড়িত, তার পরও সেদিন তাদের উদ্দেশ্যটা কী তা বুঝতেই পারিনি। তবে ইতিবাচক হওয়া উচিত ছিল। শ্রীলঙ্কা একটা জয়ের জন্য উদগ্রীব ছিল। আমরা তাদের জয়ে দারুণভাবে সহযোগিতা করেছি।' সাবেক ওপেনার ও কোচ মহসিন খান বলেন, 'এটা হতে পারত ক্রিকেটারদের আত্দবিশ্বাসের সত্যিকারের পরীক্ষা। অনুধাবন করা উচিত যে, ক্রিকেটে দিন শেষে একটা দলের জয়-পরাজয়ই মুখ্য এবং ব্যক্তিগত নৈপুণ্য এখানে দ্বিতীয়।' মহসিন খান মনে করেন, মাসব্যাপী ফিটনেস ক্যাম্প না করে শ্রীলঙ্কাকে উদ্দেশ করে এক সংক্ষিপ্ত অনুশীলন ক্যাম্প করলেই দলের বেশি উপকারে আসত। তিনি বলেন, 'ফিটনেস অবশ্যই দরকার। কিন্তু ম্যাচ ও অবস্থা বুঝতে খেলতে দরকার হয় মেধার। আমাদের খেলোয়াড়রা তা বুঝতেই ব্যর্থ হয়েছে। যেভাবে তারা টেস্ট ম্যাচটি হেরেছে তাতে আপসেট না হয়ে উপায় আছে?' কিংবদন্তি জাভেদ মিয়াঁদাদ বলেন, 'ম্যাচে ফলের জন্য কখনো তাদের উৎকণ্ঠিত মনে হয়নি। তবে অধিনায়কত্ব ও কৌশল ভিন্ন হতে পারত। রান আটকানোর চেয়ে শ্রীলঙ্কার উইকেট পতনের দিকেই বেশি নজর দেওয়া দরকার ছিল। আমি অবাক হয়ে যাই, এমন একটি ধীরগতির উইকেটে আমাদের স্পিনাররা সুবিধা করতে পারেনি। আসলে অধিনায়কের উচিত ছিল সাইদ আজমল ও আবদুর রেহমানকে আরও বেশি ব্যবহার করা।'