আর্জেন্টাইন কোচ দিয়েগো সিমিওনের সবচেয়ে বড় সফলতা ছিল বার্সেলোনার অপ্রতিরোধ্য গতিকে রুখে দেওয়া। যা এমনকি বর্তমান বিশ্বের সেরা কোচ হিসেবে পরিচিত হোসে মরিনহোও পারেননি। স্প্যানিশ লা লিগায় টানা বার্সেলোনার বন্যাকে রুখে দিয়েছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তবে শেষ পর্যন্ত মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের স্রোতের মতো আক্রমণের সামনে অবশেষে নতি স্বীকার করল দিয়েগো সিমিওনের দল। রবিবার গভীর রাতে ন্যু ক্যাম্পে কাতালানদের কাছে ৩-১ গোলের পরাজয় স্বীকার করেছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।
গত কয়েকটা দিন বার্সেলোনায় কি দুঃসহ দিনই না গেছে। একদিকে কোচ এবং প্রধান তারকা মেসির মধ্যে দ্বন্দ্বের খবর। অপরদিকে লিওনেল মেসির ক্লাব ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে বেশ বিব্রতকর অবস্থায়ই পড়েছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। তবে শেষ পর্যন্ত নিজেদের পারফরম্যান্স দিয়েই সবকিছু সামাল দিলেন মেসি-নেইমার-সুয়ারেজরা। গত সপ্তাহে কোপা দেল রে কাপে এই তিন তারকার গোলেই বিশাল জয় পেয়েছিল কাতালানরা। রবিবার এই তিন তারকাই দীর্ঘ জয় খরা ঘুচালেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে। অথচ এই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদই গত সপ্তাহে রিয়াল মাদ্রিদের মতো কঠিন দলকে একরকম উড়িয়েই দিয়েছিল। রবিবার ন্যু ক্যাম্পের ম্যাচটা ছিল 'মেসি-শো'। লিওনেল মেসির অসাধারণ ফুটবল শৈলীতেই ম্যাচের ১২ মিনিটে নেইমারের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনা। ৩৫ মিনিটে মেসির পাস থেকে বল পেয়েই গোল করেন লুইস সুয়ারেজ। আর ৮৭ মিনিটে বলতে গেলে একক কৃতিত্বে দুর্দান্ত একটা গোল করেন মেসি। বিপরীত দিকে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের পক্ষে রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করেন মারিও মানজুকিচ।
বার্সেলোনার বর্তমান অবস্থানকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনার জন্য যা প্রয়োজন ছিল, মেসিরা ঠিক তাই করেছেন। একদিকে লিওনেল মেসি দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন, তিনি বার্সেলোনা ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেন না। অন্যদিকে পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ভক্তদের মন জয় করছেন। কোচ লুইস এনরিকে বলছেন, 'বর্তমান অবস্থাকে ঠাণ্ডার করার জন্য আমাদের এমন জয় প্রয়োজন ছিল।' অন্যদিকে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের আর্জেন্টাইন কোচ দিয়েগো সিমিওনে বলছেন, 'ম্যাচে বার্সেলোনা দারুণ খেলেছে। বিশেষ করে প্রথমার্ধে তারা আমাদেকে কোনো সুযোগই দেয়নি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমরাও ভালো খেলেছি।' ম্যাচে ৬৮ ভাগ সময়ই বল দখলে রেখেছে বার্সেলোনা।
এ জয়ে বার্সেলোনা লা লিগার শিরোপা জয়ের দৌড়ে রিয়াল মাদ্রিদের পিছু পিছু ছুটে চলল। ১৮ ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট সংগ্রহ করে বার্সেলোনা অবস্থান করছে দুই নম্বরে। এক ম্যাচ কম খেলে ৪২ পয়েন্ট সংগ্রহ করে শীর্ষে অবস্থান করছে রিয়াল মাদ্রিদ। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ১৮ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করে অবস্থান করছে তিন নম্বরে। তবে সেভিয়া ১৭ ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করে চার নম্বরে থেকে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের জন্য হুমকি হয়ে আছে।