আইসিসির সহযোগী দেশ। অথচ আফগানিস্তানের রয়েছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটকে চমকে দেওয়ার ক্ষমতা। ছোট দল হয়ে যে কোনো ম্যাচে জন্ম দিতে পারে অঘটনের। যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তানের সাফল্য-ব্যর্থতা যার উপর নির্ভর করছে, সেই মোহাম্মদ নাবীর জন্ম রিফিউজি ক্যাম্পে ১৯৮৫ সালে। অফ স্পিনার কাম ব্যাটসম্যান নাবী আফগানদের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং দলের মূল ভরসা।
১৯৮৫ সালে আফগানিস্তান যুদ্ধের সময় চলে আসেন পাকিস্তানে। পেশোয়ারে থাকাকালীন বয়স যখন ১০, তখনই ক্রিকেটে হাতখড়ি। পেশোয়ারের রিফিউজি ক্যাম্পে থাকাকালীন পাকিস্তানের সাবেক অফ স্পিনার আরশাদ খানের একাডেমিতে যোগ দেন। যোগ দেন বলা ভুল। টেনিস বলে টানা ব্যাটিং ও বোলিং করতে দেখে তাকে একাডেমিতে নিয়ে আসেন আরশাদ। এরপর পাকিস্তানি সাবেক ক্রিকেটারের ঘষামাজায় নিজেকে তৈরি করে নেন নাবী। তবে আলোয় আসেন একাডেমির হয়ে ভারত সফরে। এমসিসির বিপক্ষে তার সেঞ্চুরি মুগ্ধ করে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইক গ্যাটিংকে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাননি। আফগানিস্তানে ফিরে দলের নেতৃত্বভার তুলে নেন।
আফগানিস্তান যে আজ বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলবে, তার অগ্রণী সেনানি নাবী। আফগানিস্তান ক্রিকেটে এসেছে মাত্র সাত বছর। এর মধ্যেই দলটি সবাইকে চমকে জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বকাপে। এর মধ্যে গত বছর এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে হারিয়েছে তার নেতৃত্বে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি বিশ্বকাপের আগেও অবশ্য টি-২০ বিশ্বকাপ খেলেছে। গত বছর বাংলাদেশের মাটিতে অংশ নেয় টি-২০ বিশ্বকাপে। তবে প্রথম রাউন্ডের বেড়া টপকাতে পারেনি। এবার প্রথমবারের মতো ক্রিকেট মহাযজ্ঞে নাম লেখালেও চমক দিতে চান নাবী, 'আমরা আমাদের সামর্থ্য প্রমাণ করতে চাই। ক্রিকেট বিশ্বকে আমাদের শক্তিমত্তা জানাতে চাই।' ২০০৮ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে নিজের জাত চেনান নাবী। দলটির হয়ে এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৪৩ ওয়ানডে। রান করেছেন ১০৬০। সর্বোচ্চ রান ৭৭। হাফসেঞ্চুরি সাতটি এবং সেঞ্চুরি নেই। বল হাতেও সফল নাবী। ৪১ উইকেট নিয়েছেন। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে অসাধারণ জয়ে ব্যাটিংয়ে কোনো ভূমিকা ছিল না তার। মাত্র ৭ রান করেছিলেন। বোলিংয়ে ৯.৪ ওভারে ৪৪ রানে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। তাই নাবী বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পরিচিত মুখ। ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি খেলেছেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। ওই ম্যাচে মাশরাফি বিন মর্তুজাদের প্রতিপক্ষ মোহাম্মদ নাবীও।