দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের উইকেটের খুব বেশি পার্থক্য নেই। বাংলাদেশের ভয় কিন্তু সেখানেই। কেননা দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে এক ম্যাচেও জিততে পারেনি টাইগাররা। কানাডা ও কেনিয়ার মতো ক্রিকেট 'শিশু'র কাছেও হারতে হয়েছিল! আর বড় দলগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ হেরেছিল সর্বোচ্চ ব্যবধানেই (শ্রীলঙ্কা-১০ উইকেট, দক্ষিণ আফ্রিকা-১০ উইকেট, নিউজিল্যান্ড-৭ উইকেট)। ভাগ্যিস ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ম্যাচটা বৃষ্টির কারণে মাঠে গড়ায়নি বলে দুই পয়েন্ট পেয়েছিল বাংলাদেশ। তা না হলে তো দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে শূন্য হাতেই ফিরতে হতো। কিন্তু এবার কি বাউন্সি উইকেটের ভয়কে দূর করে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে চমক দেখাতে পারবে টাইগাররা! এবারের বিশ্বকাপে অবশ্য টাইগারদের ওপর প্রত্যাশার বাড়তি কোনো চাপ থাকছে না। তবে গ্রুপের দুই 'ছোট' দল স্কটল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জয়টা তো আশা করাই যায়। আর ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কোনো ম্যাচে ম্যাজিক দেখাতে পারলে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়াও অসম্ভব নয়। অনেকের কাছে ব্যাপারটি অকল্পনীয় মনে হলেও মাশরাফিদের শেষ আটে যাওয়ার সামর্থ্য কিন্তু আছেই। তাছাড়া ২০০৩ সালের বাংলাদেশের সঙ্গে এই বাংলাদেশ দলের পার্থক্য আকাশ-পাতাল। কেননা এখন দলে রয়েছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। যিনি একাই ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন। তাছাড়া সম্প্রতি একসঙ্গে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০র সেরা অলরাউন্ডার হওয়ায় আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে রয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া টি-২০ টুর্নামেন্ট বিগ ব্যাশে মেলবোর্ন রেনিগেডসের হয়ে দারুণ পারফর্ম করছেন সাকিব। শেষ ম্যাচে তো ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরাই হয়েছেন। শুধু সাকিব কেন, ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে পুরো দলই রয়েছে ফর্মের তুঙ্গে। যদিও বাংলাদেশের উইকেটের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার উইকেটের পার্থক্য যোজন যোজন। তবে এবার বাউন্সি উইকেটেও চমক দেখাতে পারে টাইগাররা।
অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ মাঠে গড়াবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১৮ তারিখ। ক্যানবেরার ম্যানুকা ওভালে ওই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। জয় দিয়ে শুরু করার একটা সুযোগ থাকছে টাইগারদের সামনে। কিন্তু এই আফগানিস্তানকে ছোট করে দেখার উপায় নেই। কেননা বাংলাদেশ ঘরের অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে আফগানদের বিরুদ্ধে হেরেছিল। তবে এবার অনেক সতর্ক মাশরাফিরা। ৫ মার্চ নেলসনের সাকস্টন ওভালে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে। এই দুটি ম্যাচকেই 'পাখির চোখ' করে রেখেছে টাইগাররা। এছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারি, ব্রিসবেনে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। ২৬ ফেব্রুয়ারি মেলবোর্নে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে, ৯ মার্চ অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এবং ১৩ মার্চ হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অনেক আগেই দেশ ত্যাগ করবেন মাশরাফিরা। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচেও তারা অংশ নেবেন। ৯ ও ১২ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলবে টাইগাররা।