'আমার প্রথম বিশ্বকাপ। চাপ ছিল অনেক। শুরুতে চাপ অনুভব করছিলাম। কিন্তু সময় পেরুনোর সঙ্গে সঙ্গে সেটা আর থাকেনি। মাশরাফি ভাই উৎসাহ জুগিয়ে তা দূর করে দেন। এছাড়া আমাদের বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিকও অনেক সহায়তা করেছেন। তিনি তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। যা ভীষণ কাজে লেগেছে।' বললেন দলের সবচেয়ে তরুণ পেসার তাসকিন আহমেদ। যিনি টার্গেট করেছিলেন, বিশ্বকাপের সেরা ১০ বোলারের মধ্যে থাকার। ইয়ান গোল্ড ও আলিম দারের নির্লজ্জ আম্পায়ারিংয়ে সেটা হয়নি। বাংলাদেশ পারেনি কোয়ার্টার ফাইনালের হার্ডল টপকে সেমিতে জায়গা করে নিতে। আম্পায়ারিংয়ের পূর্ণ সহায়তায় ভারত এখন সেমিতে। ২৬ মার্চ মুখোমুখি হবে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার। ভারত যখন সেমিতে খেলবে, তখন টাইগাররা বাংলাদেশে। বোলিং কোচ স্ট্রিক উড়ে যাবেন জিম্বাবুয়ে। মেলবোর্ন ছাড়ার আগে জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক ও মাশরাফি, তাসকিন, রুবেলদের বোলিং কোচ স্ট্রিক পরিষ্কারভাবেই বলে গেছেন, বাংলাদেশের পেসাররা বিশ্বমানের। বিশ্বকাপের যে কোনো দলের চেয়ে অনেক বেশি ধারালো।
বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তিন বাঁ হাতি স্পিনার দেখে চোখ কপালে উঠেছিল অনেকের। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে স্পিনাররা কতটুকু সহায়তা পাবেন, সেটা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তারপরও টিম ম্যানেজমেন্টের এমন সিদ্ধান্ত তৈরি করেছিল বিস্ময়ের। তাদের চিন্তা-ভাবনা যে ভুল ছিল, বিশ্বকাপ চলাকালীনই তা প্রমাণিত। আন্ডার ফোকাসে থাকা মাশরাফি, রুবেল ও তাসকিনরা আলো ছড়িয়েছেন। দুটি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া আসেন মাশরাফি। ৫ ম্যাচে বোলিং করেন ৪৭ ওভার। উইকেট নেন ৭টি এবং রান দেন ২৫০। ওভার প্রতি স্ট্রাইকরেট ৫.৩১। সেরা বোলিং ৩/২০, প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান, ভেন্যু মানুকা ওভাল, ক্যানবেরা। বোলিং করেন সর্বোচ্চ ১৪০.৭ কিলোমিটার গতিতে। রুবেল হোসেন বিশ্বকাপ খেলতে আসেন পাহাড়সম চাপ নিয়ে। নারীজনিত ঘটনায় তিনদিন হাজতবাস করেন। আদালতের বিশেষ সুবিধায় বিশ্বকাপ খেলতে আসেন। এসেই বাজিমাত। ম্যাচ খেলেন ৬টি। নিয়মিতভাবে ১৪০ কিলোমিটারের উপর গতিতে বোলিং করেন রুবেল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৪৮ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেন। সব মিলিয়ে ৫০.৩ ওভার বোলিং করে রান দেন ২৯৮ রান। উইকেট ৮টি। ওভার প্রতি স্ট্রাইকরেট ৫.৯০। সেরা বোলিং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ৫৩ রানে ৪ উইকেট। অ্যাডিলেড ওভালের 'মাস্ট উইন' ম্যাচে তিন বলের ব্যবধানে স্টুয়ার্ট ব্রড ও জেম অ্যান্ডারসনকে বোল্ড করে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নিয়ে যান বাংলাদেশকে। তাসকিন আহমেদকে ব্লাঙ্ক চেক দিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। বলেছিলেন, যত জোরে পার বোলিং কর। অধিনায়কের কথা চিরন্তন ধরে নিয়মিত ১৪৫-১৪৭ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেন তাসকিন।