বৃষ্টির ভ্রুকুটি তো ছিলই। সেই সঙ্গে আরও তিনজনের চোখ রাঙানি দেখলেন ভারতীয় বোলাররা। ব্ল্যাকউড, ডউরিচ ও চেজের৷ এই তিনের ব্যাটেই হারতে বসা ম্যাচটি কি না ড্র করলো ক্যারিবীয়ানরা। অন্যদিকে জিততে থাকা ম্যাচটা ড্র করে একরাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়লেন কোহলিরা।
অপ্রত্যাশিত তো বটেই? কারণ চতুর্থ দিন ব্যাট করতে নেমে ৪৮ রানে চার উইকেট খুইয়ে বসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে বৃষ্টিই হয়ে গেল অ্যাডভান্টেজ। কথায় আছে, কারও পৌষমাস, কারও সর্বনাশ৷ দুই শিবিরের ছবিটা এক্ষেত্রে তেমনই। বৃষ্টির কারণে হাতে আরও একটা দিন সময় পেয়ে গেলেন জেসন হোল্ডাররা। ফলে চাপ বাড়ল সামি, ইশান্ত, অশ্বিনদের। টার্গেট ছিল, ম্যাচের শেষ দিন যেভাবেই হোক ৬টা উইকেট তুলতে হবে। কিন্তু হলো না। সারাদিনে মাত্র দুই উইকেট নিতে পারলেন ভারতীয় বোলাররা।
৭৪ রানে ডউরিচকে ফেরালেন অমিত মিশ্র। আর ব্ল্যাকউড আউট হলেন ৬৪ রান করে। তবে তাতেও ক্যারিবিয়ানদের পায়ের তলার মাটি শক্তই থাকল। সৌজন্যে চেজ। টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করে দলকে জেতালেন। ১৩৭ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচের সেরাও হয়ে গেলেন তিনি।
সাবিনা পার্কে বুধবারের ঝকঝকে সকাল বিরাট কোহলি, শিখর ধাওয়ানদের মধ্যে জয়ের শেষ আশা আবার জিইয়ে উঠেছিল। সেই আশার আলো আটকে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন ব্ল্যাকউড। তাকে ফেরাতে পারলেই ফের জয়ের আলো এসে চোখে পড়বে। কিন্তু তারপরও যে আরও শক্তিশালী প্রাচীরের মুখে পড়তে হবে, তখনও তা অধিনায়ক বিরাটের অজানাই ছিল।
সাবেকরা ক’দিন আগেও হলফ করে বলেছিলেন, বিরাট এখন বড় হয়ে উঠেছেন। এই বিরাট আর মাঠের মধ্যে মেজাজ হারিয়ে দর্শকদের উদ্দেশে মধ্যমা দেখান না। কথায়, হাবে-ভাবে তিনি নিজেকে অনেক সংযত করে ফেলেছেন। কারণ, নেতৃত্বের দায়িত্ব! সাবেকরা নিজেদের কথা হয়তো আবার ফিরিয়ে নিতে পারেন। সাবিনা পার্কের বিরাট সেই আগের মতোই। একটা হাফ-চান্স মিস হলেই বিরাট প্রায় মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ছিলেন। তারপর সতীর্থদের ছোটখাটো ভুলে আফসোস তো ছিলই!
ভারতীয় বোলারদের এদিনের পারফরম্যান্সে অবশ্য বেশ হতাশ কোচ অনিল কুম্বলে। ম্যাচ ড্রয়ের পর তিনি বলছিলেন, “চতুর্থ দিন পর্যন্ত ভাল জায়গাতেই ছিলাম আমরা। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা দারুণ খেলেছে। গতকাল অনেকটা মূল্যবান সময় খরচ হয়ে গিয়েছিল। আরও ভাল বল করা উচিত ছিল। তবে বৃষ্টিতে অনেকগুলো ওভার খেলা হয়নি। সব বিষয়গুলোই ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব ফেলে। আবার দ্বিতীয় দিন ইনিংস ঘোষণা করে দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাট করা যেত। মোট কথা তৃতীয় টেস্টের আগে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসে আলোচনা করতে হবে। কখন ইনিংস ঘোষণা করব, কত টার্গেট রাখব, এসব বিষয়ে আরও সতর্ক হতে হবে।”
বিডি-প্রতিদিন/০৪ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব