ইনজুরিতে আক্রান্ত অধিনায়ক এঞ্জেলো ম্যাথুজের সুস্থতার বিষয়ে স্থায়ী সমাধান খুঁজছে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট (এসএলসি)। তাদের লক্ষ্য ৩০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারকে পুরোপুরি সুস্থ করে মাঠে ফেরানো।
শ্রীলঙ্কান জাতীয় ক্রিকেট দলের অন্য সদস্যরা যখন বাংলাদেশ সফরে, নতুন করে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়া ম্যাথুজ তখন নিজ গৃহেই বিশ্রামে রয়েছেন। এই ইনজুরির কারণে প্রাথমিকভাবে দুই সপ্তাহের জন্য তাকে জাতীয় দল থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
দীর্ঘ সময় ধরেই ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করছেন এই ক্রিকেট তারকা। হয় হাঁটুতে, নয়তো হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি লেগেই আছে। নতুন করে আক্রান্ত ইনজুরির কারণে তাকে বাংলাদেশের ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের মাঝ পথেই দেশে ফিরতে হয়েছে। সফরের বাকী সময়ের জন্য স্থায়ীভাবেই দলের বাইরে চলে গেছেন তিনি।
এসএলসি’র প্রধান নির্বাহী অ্যাশলে ডি সিলভা বলেন, ‘এই মুহূর্তে তিনি (ম্যাথুজ) ইনজুরি হুমকিতে রয়েছে। তার বিষয়টি কিছুটা জটিল। আমরা প্রথমে এর গভীরে যেতে চাই। এরপর চিকিৎসায় নামতে চাই। আমরা আসলে ঠিক বুঝতে পারছি না সমস্যাটা কোথায়।’
বোর্ড বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দেয়া পারমর্শ যাচাই বাছাই করে আসল রহস্য উদঘাটন করতে চায় উল্লেখ করে ডি সিলভা বলেন, তার এই ইনজুরির স্থায়ী সমাধানের জন্য সেরা ব্যবস্থাটিই গ্রহণ করা হবে। এখন তিনি বেশ ভয়ের মধ্যেই থাকেন। আর এই ভীতি তাকে সমস্যায় ফেলে দিতে পারে। তাই ফিজিও তাকে পুরোপুরি বিশ্রাম নিতে বলেছেন। তবে বোর্ড চায় তার ইনজুরির স্থায়ী সমাধান। তাকে মাঠে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা যে কোন কিছু করতে প্রস্তুত।’
ম্যাথুজ নতুন করে ইনজুরিতে পড়ার পর তার সবগুলো রিপোর্ট যুক্তরাজ্য ভিত্তিক লংকান চিকিৎসক ডা. থারিন্ডু বেদাসিংহের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি এই ক্রিকেটারকে কয়েক সপ্তাহ বিশ্রাম নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে নতুন করে এমআরআই স্ক্যান করাতে বলেছেন, যাতে করে মাঠে ফেরার আগে তাকে পরিপূর্ণভাবে সুস্থ করে তোলা যায়।
ম্যাথুজ বলেছেন, ‘ইনজুরির কারণে বার বার দলে সুযোগ পাওয়া ও বাদ পড়াটা অত্যন্ত কঠিন একটা বিষয়। তাই এই মুহূর্তে আমি আর কোন ঝুঁকি নিতে চাই না। বর্তমানে আমি পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। আগামী সপ্তাহে কতুটুক উন্নতি হয়েছে তা পরখ করার জন্য এমআরআই স্ক্যান করানো হবে।’
লংকান অধিনায়ক বলেন, ‘বিষয়টি এখনো উপদ্রবের পর্যায়ে রয়েছে। তবে আমাকে বলা হয়েছে এর সঠিক চিকিৎসা করানো না গেলে সেটি দীর্ঘস্থায়ীভাবে আসন গাড়বে। আমি এখন সবকিছুই করতে পারছি। দৌঁড়াতেও পারছি। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় কোন ঝুঁকি নিতে পারছি না।’
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে লংকান ক্রিকেটে অভিষিক্ত হবার পর থেকেই দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন অল রাউন্ডার ম্যাথুজ। কিন্তু ইনজুরির কারণে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি জাতীয় দলে আসা-যাওয়ার মধ্যেই ব্যস্ত রয়েছেন। অভিষেক পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্য খেলোয়াড়দের তুলনায় সব ফর্মেটের ক্রিকেটে অনেক বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ৩৩৮টি ম্যাচে অংশ নিয়ে সংগ্রহ করেছেন ১১০৩৪ রান। উইকেট নিয়েছেন ১৮৪টি।
২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটকে সামনে রেখে লংকান নির্বাচকরা ম্যাথুজকেই সীমিত ওভারের ক্রিকেটের জন্য অধিনায়ক মনোনীত করেছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে নিজ মাঠে ভারত ও বাংলাদেশকে নিয়ে অনুষ্ঠিতব্য ত্রিদেশীয় ইন্ডিপেন্ডেন্ট কাপে লংকান দলের নেতৃত্ব দিবেন ম্যাথুজ।
বিডি প্রতিদিন/০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/এনায়েত করিম