উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে ফাইনালের উঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিল নেদারল্যান্ডসের ক্লাব আয়াক্স এবং ইংল্যান্ডের ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পার।
বুধবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে লুকাসের একক প্রচেষ্টায় আয়াক্সের বিরুদ্ধে অবিস্মরণীয় জয় পায় টটেনহ্যাম।
টুর্নামেন্টে জায়ান্ট কিলার হিসাবে খ্যাতি পাওয়া আয়াক্স টটেনহ্যামের বিরুদ্ধে প্রথম লেগের অ্যাওয়ে ম্যাচে ১-০ গোলে জয় তুলে নিয়েছিল। জুভেন্টাস ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো চ্যাম্পিয়ন দলকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দেওয়া আয়াক্স ঘরের মাঠে টটেনহ্যামকে আটকে দেবে, এমনটাই ধরে নিয়েছিল ফুটবলবিশ্ব।
ফিরতি লেগের প্রথমার্ধেই আয়াক্স ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ায় টুর্নামেন্ট থেকে হটস্পারের বিদায় কার্যত সময়ের অপেক্ষা বলে মনে হচ্ছিল। তবে চিত্রনাট্যে যে এমন চমকপ্রদ মোড় রয়েছে, তা অনুমান করতে পারেনি কেউই।
দ্বিতীয়ার্ধে টটেনহ্যানের দুরন্ত ফুটবলে দিশেহারা আয়াক্স এমন অসহায় আত্মসমর্পণ করবে, তা ভাবা যায়নি। লুকাসের একক আগ্রাসনে খেই হারিয়ে আয়াক্স শেষ পর্যন্ত হার মানে ২-৩ গোলে। প্রবল চাপের মুখে এমন বড় মঞ্চে হ্যাটট্রিক করে টটেনহ্যামকে অবিস্মরণীয় রাত উপহার দেন লুকাস মউরা।
তবে মোউরার এমন কৃতিত্বের দিনেও সব কিছু ছাপিয়ে অনেকের মন জয় করে নিয়েছেন আয়াক্সের দুই মুসলিম ফুটবলার হাকিম জিয়েচ ও নুসাইর মাজরুইয়ের।
খেলার মাঝে মাঠের মধ্যেই এ দুই ফুটবলারের ইফতার করার দৃশ্যটি নেট দুনিয়ায় এখন ভাইরাল। রোজা রেখে মাঠে এর আগে অনেকবারই নেমেছেন হাকিম জিয়েচ ও নুসাইর মাজরুই।
গতকালের ম্যাচেও তেমনটি দেখা গেল। রোজা অবস্থায় খেলতে নেমে যান মাজরুই ও জিয়েচ। কিন্তু এবার বিষয়টি ছিল অন্যরকম। খেলার মধ্যেই ইফতারের সময়টি চলে আসে। ম্যাচের ২৪তম মিনিটে চলে আসে ইফতারের সময়।
ইফতারের সময় হলে খেলা চলাকালীন সাইডলাইন থেকে খেজুর নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে সেটি দিয়ে ইফতার করেন এ দুই ফুটবলার।
তাদের এভাবে ইফতার করার ভিডিও প্রকাশ হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সাইডলাইন থেকে খেজুর নিয়ে তা খেতে খেতে দৌড়ে খেলায় মনযোগী হচ্ছেন নুসাইর মাজরুই।
মুসলিমরা ছাড়াও ভিডিওটি শেয়ার করতে দেখা গেছে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের। অনেকেই তার ধর্মভীরুতার বিষয়টির প্রশংসা করে তার ওপর শান্তি বর্ষণ করেছেন।
টটেনহ্যামের এই ম্যাচে জয়ের অর্থ দুই লেগ মিলিয়ে সেমিফাইনালের স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-৩। আয়াক্সের একটি অ্যাওয়ে গোলের তুলনায় টটেনহ্যামের তিনটি অ্যাওয়ে গোল এক্ষেত্রে নির্নায়ক হয়ে দাঁড়ায়। অ্যাওয়ে গোলর ভিত্তিতেই আয়াক্সকে পিছনে ফেলে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠে টটেনহ্যাম।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন