চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরের ১১৬টি স্পটে পোস্টার লাগানোর জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু কেউ মানে না এ নিয়ম। আইন থাকলেও তা মানার বা মানানোর প্রবণতা না থাকায় এখন যার যেমন ইচ্ছা যত্রতত্র পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন লাগাচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে নগরের সৌন্দর্য, সঙ্গে চসিক হারাচ্ছে রাজস্ব। তবে চসিক পরীক্ষামূলক নগরের দুটি ওয়ার্ডের ২৫টি স্থানে পোস্টার লাগানোর জন্য নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে। এখানে সফল হলে নগরের বাকি ৩৯টি ওয়ার্ডেও কাজ শুরু হবে। আগামী ৭ জানুয়ারি দেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে পোস্টার-ব্যানার সাঁটানোর প্রতিযোগিতা শুরু হবে।
নগরবাসীর অভিযোগ, চসিকের অবহেলার কারণেই পোস্টার লাগানোর নিয়ম ও আইন থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফলে নগরের সৌন্দর্যহানি হয়, চসিকও হারায় রাজস্ব। অথচ এক সময় নগরের দেয়ালগুলোতে সৌন্দর্য ও শৈল্পিকতার চর্চা হতো। ছিল প্রতিবাদ বা কাউকে আকৃষ্ট করার বড় মাধ্যম।
জানা যায়, সিটি করপোরেশন কর আইন-১৯৮৬ অনুযায়ী, শহরে ব্যানার ফেস্টুন লাগানোর জন্য নির্দিষ্ট ফি দিয়ে অনুমতি নিতে হয় সিটি করপোরেশন থেকে। এ ক্ষেত্রে ৬ বর্গফুটের একটি পোস্টারের জন্য দৈনিক ১০ টাকা এবং ১০ বর্গফুটের পোস্টারের জন্য দৈনিক সাত টাকা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে। নিয়ম ভাঙলে সর্বনিম্ন ৫ হাজার ও সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডের বিধান আছে। তবে বর্তমানে নগরের কেউ চসিকের অনুমোদন নিয়ে পোস্টার সাঁটান না।চসিক মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাসেম বলেন, নগরে পোস্টার লাগানোর একটা আইন আছে। নানা কারণে হয়তো তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তবে চসিক বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে নগরের ১৫ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে পোস্টার লাগানোর একটি উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে দুই ওয়ার্ডের ২৫টি স্থান নির্ধারিত হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি বাস্তবায়ন করা হবে। নিয়ম না মানলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, নগরের এমন কোনো ওয়ার্ড নেই, যেখানে পোস্টার সাঁটানো হয় না। নগরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সীমানা দেয়াল, বাড়ির দেয়াল, উড়াল সড়কের স্তম্ভ, পরিবহন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীরসহ সর্বত্র লাগানো হয় পোস্টার। নগরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়, সরকারি অফিস, প্রশাসনিক কার্যালয়ের সামনে এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পোস্টার-ব্যানার সাঁটানোর প্রবণতা বেশি। কার্যত, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বড় বড় ছবি নিয়ে ব্যানার পোস্টার লাগান। কোচিং সেন্টার, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পণ্যের প্রচারের পোস্টারও লাগানো হয়। নগরীর ৯০ শতাংশই কোচিং সেন্টার, কিন্ডার গার্টেন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পোস্টার। দৃশ্যদূষণে অতিষ্ঠ নগরবাসী।