৫ আগস্ট চার বছর পূর্ণ হলো জেলার পর্যটন খ্যাত হাওরাঞ্চলের মদন ট্রলার দুর্ঘটনার। আনন্দ করতে হাওর ভ্রমণে এসে ট্রলার ডুবে ১৮ জন নিহত হয়েছিলেন গত ২০২০ সনের এই দিনে। নিহতদের মধ্যে ছয়জনই ছিলো শিশু। ডুবে যাওয়া ট্রলারে মোট ছিল ৫০ জন।
এ ঘটনায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম ওই রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও দুই সপ্তাহ পরে ১৯ আগস্ট প্রতবেদন জমা দেয়। ওই কমিটি ঝড়ো বাতাস ও ঢেউকে দায়ী করে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে নৌযানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জাম রাখা, নৌযানের রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস পরীক্ষা, অতিরিক্ত যাত্রী বহন বন্ধ করা, চালকদের প্রশিক্ষণ, ডুবুরি ইউনিট গঠন ও পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন বিষয় উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু প্রশাসনের উদাসিনতায় দীর্ঘ চার বছরেও তার কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে এবছরও বালই সেতুর কাছে একটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। যদিও কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, আবহাওয়া নির্ণায়ক কোন যন্ত্র স্থাপন করলে ট্রলার দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে। সেই সাথে প্রশাসনের নজরদারি রাখতে হবে। কারণ বছর বছর ঘাট থেকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আসে। এবছরও ৩৩ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছেন বলে জানান ইজারাদার আব্দুল হালিম।
এদিকে, ওই সময় গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনার বিচার দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসন ঘটনার তদন্ত করে নৌ-পুলিশ ট্রলারটির মালিক লাহুত মিয়া, চালক আল আমিন ও সহযোগী কামরুল ইসলামকে আসামি করে ঢাকার নৌ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। পরের বছর ২৬ এপ্রিল রাতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় মদন থানা পুলিশ। পরবর্তীতে জামিনে বেরিয়ে সেই আগের ফিটনেসবিহীন ট্রলার নিয়ে বহাল তবিয়তেই তারা আবার শুরু করেন নৌ চালনা। আর অতীতের মতোই যাত্রী পরিবহনের প্রতিযোগিতা চলছে ট্রলার চালকদের মধ্যে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহ আলম মিয়া বলেন, আমরা ঘাট ইজারা দেই। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য সকল সরঞ্জাম তাদের রাখা উচিত। তারপরও গত বছর আমরা ইজারাদারের কাছে কিছু লাইফ জ্যাকেট দিয়েছিলাম নৌকাতে দেওয়ার জন্য।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত