দিনাজপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যাপক টিয়ার সেল ও গুলি বর্ষণ করেছে পুলিশ। এ সময় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও তার সহোদর জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পাশাপাশি পুলিশের দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অসংখ্য টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি করেছে। এতে সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।
রবিবার সকাল থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা দিনাজপুর ফুলবাড়ী বাসষ্ট্যান্ড এলাকা ও পলিটেকনিক কলেজ মোড় এলাকায় জড়ো হতে থাকে। দুপুরে দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজ মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি চারুবাবুর মোড় এলাকা আসলে দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মাসুমসহ পুলিশের দুটি গাড়িতে হামলা করে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এসময় পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল ও পুলিশ টিয়ার সেল ও গুলি নিক্ষেপ করে। এরপর তারা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও তার সহোদর জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সংঘর্ষে ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষে কয়েকজন সাংবাদিক-ক্যামেরপার্সন আহত হন।
সংঘর্ষের কারণে পুরো দিনাজপুর শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দিনাজপুর শহরের আইনকলেজ মোড়, সদর হাসপাতাল মোড়, পৌরসভা মোড়, জজকোর্ট মোড়, বুটিবাবুর মোড় ও চারুবাবুর মোড় আন্দোলনকারীরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা অবস্থান করে।
এর আগে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দিনাজপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সামনে মহাসড়কে নিমনগর ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জমায়েত হয়ে অবস্থান নেয়। এসময় বিভিন্ন শ্লোগানের পাশাপাশি বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। অনেককে আন্দোলনকারীদের পানির বোতল দিতে দেখা যায়। বেলা ১২টা পর্যন্ত এই এলাকায় অবস্থানকালে যানবাহন চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ থাকে। পরে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভসহ শহরের হাসপাতাল মোড়ে অবস্থান নেয়।
এদিকে, দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা থানায় হামলা এবং ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালায় এবং আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল