বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খবিরুল আহসান। সেই ইউএনওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। সম্প্রতি ওই ইউএনওসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অভিযোগ এলে সেখান থেকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও মো. খবিরুল আহসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এক বছর ধরে কর্মরত আছি এ উপজেলায়। আমার নামে যে অভিযোগ উঠেছে সেটি নিশ্চয়ই কর্তৃপক্ষ তদন্ত করবে। আমাকে গত সরকারের সময় জামায়াত বানিয়ে অভিযোগ দিয়েছে কিছু মানুষ, যারা কোনো সুবিধা পায়নি। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমার একই জেলায় বারহাট্টায় বদলি হয়েছে। তবে এখানকার শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন যেন আমাকে এখানেই রাখা হয়। আশা করি তদন্তে সত্য উঠে আসবে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ৪ আগস্ট পূর্বধলা উপজেলার গোহালাকান্দা ইউনিয়নের জালাগুকা শামগঞ্জ বাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা ৩৫ বিসিএসের এই কর্মকর্তা। ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হাতে থাকা রামদা ও বিভিন্ন দেশি অস্ত্রসহ পুলিশ ও আনসার সঙ্গে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন ইউএনও। নির্দেশনা পেয়ে উপজেলার যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ক্যাডাররা প্রকাশ্যে আনসার ও পুলিশের কাছ থেকে ৯টি অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনরতদের ওপর গুলি ছোড়ে। এতে মানিকদি গ্রামের কলেজছাত্র শাকিব হাসানসহ তিনজনের শরীর ঝাঁঝড়া ও ৫-৬ জনের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া ৭০ শিক্ষার্থী আহত হয়। আন্দোলন চলাকালীন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গত ২৬ অক্টোবর পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১৫ জনের নামে পূর্বধলা থানায় মামলা করা হয়।
ইউএনওকে মামলায় আসামি করতে চাইলে পূর্বধলা থানার ওসি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে মামলায় না দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার চাপ সৃষ্টি করে বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।