কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি আবার কখনো টানা খরতাপ-এসব বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই জমি থেকে পাট কেটে সোনালী আঁশ ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নাটোরের সিংড়ার কৃষকরা। এ বছর পাটের ফলন ভালো হলেও সন্তোসজনক দাম পাচ্ছেন না তারা।
কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমের শুরুতে প্রতি মণ পাটের দাম ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা কেনাবেচা হলেও এখন আর সেই দাম নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে দেশের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ও সরকার পরিবর্তনের প্রভাবে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণে দাম কমেছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। তবে দেশ স্বাভাবিক হলে পাটের দাম বাড়বে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রবি পাট-১ ও অন্যান্য দেশি জাতের মোট ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে।
উপজেলার শেরকোল পুঠিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একটি খালে দেখা যায়, পাট চাষিরা পানিতে জাগ দেওয়া পাটের আঁশ ছড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ খালের কোমর পানিতে কাজ করছেন ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক। এদের মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। নারী শ্রমিকরা জানায়, আঁশ ছড়ানো পাট খড়ি দুই ভাগের এক ভাগ নেওয়ার শর্তে তারা এসব কাজ করছেন।
শেরকোল হাড়োবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আতাহার আলী জানান, আমার নিজের ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। ২ দিন আগে কেটে ঘরে তুলেছি। হাল চাষ, পানি সেচ, সার, বীজ ও শ্রমিক খরচসহ জমি থেকে পাট কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত আমার প্রতি বিঘা খরচ হয়েছে ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় আমি ফলন পেয়েছি ৮ থেকে ৯ মণ। বর্তমান বাজার ২৬০০ টাকা থেকে ২৮০০ টাকা প্রতি মণ। সেই হিসাবে আমার তেমন লাভ হবে না। পাটের দাম প্রতি মণ ৪ হাজার টাকা করার দাবি করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানান, চলতি অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনায় ১ হাজার ৯০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ১ কেজি করে রবি পাট-১ জাতের পাটবীজ দেওয়া হয়েছিল। এবছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষক। তবে দেশ স্বাভাবিক হলে পাটের দাম আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই