ফেনীর রাজাপুর, সিন্দুরপুর, পূর্ব চন্দ্রপুর, জায়লস্কর, পাঁচগাছিয়া, শর্শদি ও মোটবি ইউনিয়নের কিছু গ্রাম ছাড়া জেলার অন্যান্য স্থান থেকে বানের পানি প্রায় নেমে গেছে। এসব গ্রামের গ্রামীণ সড়কগুলো এখনও পানি রয়েছে। এখনও ফেনী- রাজাপুর সড়কে পানি রয়েছে।
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় জেলার ছয় উপজেলায় কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯১৪ কোটি টাকা। প্রাণিসম্পদ খাতে প্রায় ৩৯১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বানের পানিতে তলিয়ে ৬৪ হাজার ১৬১টি গবাদিপশু ও ২৩ লাখ চার হাজার ৪১০টি হাঁস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে। পোলট্রি ও মৎসখাত সম্পূর্ণ ধবংস হয়ে গেছে। কৃষি জমিগুলো তলিয়ে গেছে। পুঁজি হারিয়ে অনেকে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
বন্যায় জেলার প্রায় সড়ক ভেঙ্গে গেছে। এবারের বন্যায় ফেনীর সড়কে ক্ষতি ১৪০ কোটি ৪৯ লাখ টাকার মতো। মেরামত করতে হবে গ্রামীণ ৫০০ কিলোমিটার সড়ক।
জেলা মৎস কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম গতকাল বুধবার প্রতিবেদককে জানান, ফেনী জেলার অধিকাংশ পুকুর ও মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। এতে ভেসে গেছে ৭৫ কোটি টাকার মাছ। বন্যায় মৎস্য খাতে রেণু, পোনা, বড় মাছ ও পুকুরের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে জেলার ছয়টি উপজেলায় বন্যায় মাছচাষিদের ৭৫ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ সংশ্লিষ্ট অন্তত ২০ হাজার মানুষ। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে একক ও যৌথ মালিকানাধীন ১৮ হাজার ৭৬০টি পুকুর-দিঘি। এসব পুকুর থেকে ২২ কোটি ৬৪ লাখ টাকার বড় মাছ এবং ১৯৭ লাখ টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। এ ছাড়া জেলায় খামারিদের ৫৪ লাখ টাকার অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বুধবার সন্ধ্যায় এক প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানানো হয়েছে বর্তমানে জেলার কিছু স্থানে জলাবদ্ধতা ছাড়া বন্যার পানি নেমে গেছে। বন্যায় আনুমানিক ১০ লাখ মানুষ দুর্যোগের শিকার হয়েছেন। বুধবার জেলার বিভিন্ন উপজেলার ২২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪ হাজার ১৯জন আশ্রিত রয়েছেন। জেলায় সরকারি ভাবে ২টি মেডিকেল ক্যাম্প ও ১৪টি মোবাইল টিম চালু রয়েছে। বন্যায় জেলায় মোট ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ